নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীতে একটি ডাইং কারখানায় গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণে ছয় শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে, যেখানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানার কর্মী আলামিন, আজিজুল্লাহ, সেলিম মিয়া, জালাল, নাজমুল হুদা এবং নিরাপত্তা প্রহরী নুর মোহাম্মদ। তাদের প্রত্যেকের শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালবেলায় কারখানার নিচতলার বয়লার রুমে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছিলেন। হঠাৎ গ্যাসলাইনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে, সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। আগুনের তাপে ও ধোঁয়ায় কর্মীরা পালানোর সুযোগ না পেয়ে দগ্ধ হন। বিস্ফোরণের ধাক্কায় বয়লার রুমের ছাদও আংশিক ধসে পড়ে। সহকর্মীরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, “দগ্ধ ছয়জনকেই জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কারো শরীরের কত শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, তা নির্ধারণের কাজ চলছে।”
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, “এম এস ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং কারখানায় সকালে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।”
স্থানীয়রা ধারণা করছেন, পুরনো বা ত্রুটিপূর্ণ গ্যাসলাইন থেকেই এ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছেন।
বিস্ফোরণের পর শিল্পনগরীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের সাময়িকভাবে বাইরে নিয়ে আসা হয় নিরাপত্তার স্বার্থে। এলাকাবাসীর দাবি, শিল্পাঞ্চলের গ্যাসলাইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় এমন দুর্ঘটনা বারবার ঘটছে।
দগ্ধ শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রতিদিনের মতো সকালের শিফটে তারা কাজে যোগ দিয়েছিলেন। হঠাৎ দুর্ঘটনার খবর শুনে সবাই হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসকরা জানান, আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল নয় এবং তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এদিকে, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্ত করে গ্যাস লাইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাচাইয়ের আশ্বাস দিয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে কারখানাটি অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :