জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন আয়োজন করলে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তাঁর দাবি, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন কোনোভাবেই বৈধ হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপজেলা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন,
“আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মাত্র তিন শতাংশ মানুষ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন করতে চাচ্ছে। এই অবস্থায় কোনো নির্বাচন হতে পারে না। এটি হবে প্রহসন।”
তিনি আরও বলেন,
“যে নির্বাচনের জন্য আমরা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বলেছিলাম, এখন একই নাটক আবার মঞ্চস্থ হচ্ছে। ঐক্য কমিশনের নামে অনৈক্য কমিশন তৈরি করা হয়েছে। দেশের অর্ধেক মানুষকে বাদ দিয়ে যে ঐক্য করা হচ্ছে, তা আসলে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।”
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন,
“আপনারা যা ভাবছেন, তা হবে না। শেখ হাসিনার মতো শক্তিশালী নেতৃত্বও আন্তর্জাতিক সমর্থন নিয়েও টিকে থাকতে পারেননি। সেখানে আপনাদের এ পাতানো রাজনীতি দুই মিনিটও টিকবে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয় এবং তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক দল রয়েছে।
“আমরা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে আন্দোলন করেছিলাম, যেখানে কোনো রাজনৈতিক দল থাকতে পারবে না। এখন যাদের নিজস্ব দল আছে, তারা তত্ত্বাবধায়ক হতে পারে না,”—যোগ করেন জি এম কাদের।
জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগকে বাদ দেওয়ার পদক্ষেপের সমালোচনা করে তিনি বলেন,
“আওয়ামী লীগকে বাদ দিতে হলে আদালতের রায় বা মামলার মাধ্যমে দোষী প্রমাণ করতে হবে। প্রশাসনিক আদেশে দল বাদ দেওয়া যায় না। এতে কোনো অর্থ নেই।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জামায়াতে ইসলামী তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলেই জাতীয় পার্টিকে বাদ দিতে চাচ্ছে।
“মানুষ এখন ভাবছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দিকের এক মুদ্রা। সেখানে জাতীয় পার্টিই হতে পারে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি,”—বলেন জি এম কাদের।
সভায় দলের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন,
“জাতীয় ঐকমত্যের অভাব দেশকে বিভক্ত করছে। সরকার নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, কিন্তু তাদের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সুষ্ঠু ভোটের জন্য প্রয়োজন নির্দলীয় বা সর্বদলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন,
“জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করা হলে আমরা তা প্রতিহত করব।”

আপনার মতামত লিখুন :