মাস্টার্স (স্নাতকোত্তর) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শেরে- বাংলা হলে দ্বৈতাবাসিক আসন বরাদ্দ পেয়েছেন মোঃ শহিদুল ইসলাম। বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শহিদুল শিবিরের সাথী , বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি ফোকাস কোচিংয়ের বরিশাল শাখার সহকারী পরিচালক ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত শেরে বাংলা হলের দ্বৈতাবাসিক আসন পাওয়ারের তালিকা ১ নম্বরে নাম রয়েছে শহিদুলের । কিন্তু বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ১৫ জুলাই। যেখানে শহিদুল ইসলাম ২.৮১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
অপরদিকে বারবার আবেদন করেও আসন না পেয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। নাম প্রকাশ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফেসবুক গ্রুপ লিংকার্সে একজন লিখেছেন,এমন এক বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে হলের আসন নিয়েও দুর্নীতি। আসন পেতে গেলে লাগে রাজনৈতিক পদ নয়তো তেলবাজি। যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো, বাড়ি কাছে তারাও আসন পেয়ে যায় অথচ আমরা ৪০০ কি.মি দূরের হয়েও আসন পেলাম না!!জয় দুর্নীতির জয়।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মিনহাজুল ইসলাম বলেন," শিবিরের যে আত্মপ্রকাশ করে সে বিতর্কিত হয়, যারা গুপ্ত থাকে তারা কেন্দ্রীয় নেতা হয়, আদর্শিক হয়।হলগুলোতে সীট বাণিজ্য, গণরুম-গেষ্টরুম চালু করেছে ছাত্রলীগ আর তার ধারা অব্যহত রেখেছে তাদের ভ্রাতৃপ্রীতিম সংগঠন শিবির। যেহেতু তাদের কমিটির লিষ্ট প্রকাশ করে না, নিজেদের পরিচয় দিতে লজ্জা ও ভয় পায় , তাই তাদের সনাক্ত করা কঠিন। সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তারা এভাবে হলগুলো দখল করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষন্ন করছে। প্রকৃত পক্ষে যাদের সীট দরকার তাদের উপর জুলুম করছে। মূলত ডাকসুর পর তারা আরও বেপোরোয়া হয়ে গেছে। শিবির এই দখল করা সীটগুলোতে নিশ্চয়ই তাদের অনুসারী তুলবে এবং তাদের দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করাতে বাধ্য করবে।
শিবিরের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, শহিদুল শিবিরের সাথী, কিন্তু বর্তমান কমিটিতে নেই। অনেক আগে আবেদন নেওয়া হয়েছে তখন শহিদুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল, সাবেক শিক্ষার্থী সিট পেলে এটা প্রসাশনের গাফিলতি।আমিও অনেক শিক্ষার্থীদের থেকে জেনেছি হলে আবেদন করে তারা সিট পাচ্ছে না,এটা দুঃখজনক।
মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, অনেক আগে আবেদন করেছি,তখন আমি মাস্টার্স ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলাম। ভাইভার দিন আমার বন্ধুরা জানায় হলের ভাইভা চলছে।আমি ভাবছি এটা মাস্টার্স জোনের সিঙ্গেল সিট। তাই ভাইবা দিয়েছিলাম , এখন আমি বাড়িতে চলে এসেছি।আমি টাকা পরিশোধ করবো না এবং হলেও উঠবো না।আমি আগে শিবিরের অনেক দায়িত্ব পালন করেছি , কিন্তু এখন কোনো দায়িত্বে নেই।
শেরে- বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুল আলিম বাসির বলেন, আগের প্রভোস্ট আবেদন জমা নিয়েছেন, কিন্তু ভাইবা নিতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের দাবী অনুযায়ী পুনরায় আবেদন ফরম ছাড়া হয়েছে এবং দুইবারের আবেদনের ভাইবা একসাথে নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে তথ্য দিতে পারেনি। তাই বিষয়টি আমি জানতাম না। তাকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ দেওয়া হবে না এবং সিটটি অন্য একজনকে দেওয়া হবে। অর্থনৈতিক অবস্থা,রেজাল্ট, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ির দূরত্ব বিবেচনা করে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, হলে যে পরিমাণ সিট ফাঁকা আছে তার থেকে কয়েকগুণ বেশি আবেদন পড়েছে। তাদের অনেকেরই সিট প্রয়োজন হলেও দিতে পারিনি, তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ ছাড়া আমার কিছুই করার নেই।
আপনার মতামত লিখুন :