ঢাকা শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

ডট বলের বেড়াজালে ব্যাটাররা, চাপে বাংলাদেশ দল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৫

ডট বলের বেড়াজালে ব্যাটাররা, চাপে বাংলাদেশ দল

ছবিঃ সংগৃহীত

দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর ক্ষুব্ধ দর্শকদের প্রতিক্রিয়া মাঠ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত স্পষ্ট। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামের বাইরে সমর্থকদের কিছু অংশের ক্ষোভ ছিল প্রবল, যদিও নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে। হার নিশ্চিত করার পর সামাজিক মাধ্যমেও চলেছে তীব্র সমালোচনা। বিশেষ করে জাকের আলী, শামীম হোসেন এবং তাওহীদ হৃদয়কে ঘিরে সমর্থকদের হতাশা চরমে পৌঁছেছে।

১৪৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে হাতে ৮ উইকেট রেখেও ৪৮ বলে ৬৫ রান তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সিরিজও খুইয়েছে দল। আজ শেষ ম্যাচে লিটন দাসদের সামনে অন্তত মান–রক্ষা করার সুযোগ। তবে ব্যাটারদের বর্তমান ফর্ম দেখে অনেক সমর্থকই আর আশাবাদী নন। ড্রেসিংরুমে অবশ্য আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার চেষ্টা চলছে। ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে তানজিদ তামিম বলেছেন, “একটা ম্যাচ বাকি। চেষ্টা থাকবে জিততে। ডট বল কমাতে পারলে জেতা সম্ভব।”

সমস্যার মূলেই রয়েছে অতিরিক্ত ডট বল। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ব্যাটাররা দিয়েছেন ৪২ শতাংশ ডট বল, যেখানে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডট বল ছিল ৩৭ শতাংশ। ওপেনার তানজিদ তামিম ৪৮ বলের ইনিংসে ১৫টি ডট খেলেন, যার মধ্যে পাওয়ার প্লেতে ছিল সাতটি ডট। এমন পরিস্থিতিতে তার ৬১ রানের ইনিংসকেও অনেকেই যথেষ্ট মূল্য দিতে পারছেন না। শুরুর সুযোগ কাজে না লাগিয়ে পরে ধীরগতি, বিশেষ করে শেষ ১০ বলে মাত্র ১০ রান—এমন পারফরম্যান্সে ইনিংসটি ‘অমূল্য’ নয়, বরং বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শেষ দিকে দলের প্রয়োজন ছিল দ্রুত রান, কিন্তু সেট ব্যাটার হয়েও তিনি গতি আনতে ব্যর্থ হন।

একই সমস্যা দেখা গেছে সাইফ হাসানের ব্যাটেও। পাওয়ার প্লেতে তার ১১ বলের মধ্যে ৭টি ডট। আগের ম্যাচেও এমন চিত্র দেখা গেছে। এশিয়া কাপ বা মিরপুরে সাম্প্রতিক ওয়ানডেতে তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ছাপ চট্টগ্রামে ম্লান। অবশ্য সিরিজের শেষ ম্যাচগুলোতে তার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে কিছুটা অগ্রগতি আছে, তাই আজ তার কাছ থেকে অনেকে বড় ইনিংসের আশা রাখছেন।

কিন্তু জাকের আলীর ফর্ম নিয়ে এখনো তীব্র প্রশ্ন। তার জায়গায় নুরুল হাসান সোহানকে দলে ফেরানোর দাবি প্রবল হলেও আপাতত সুযোগ পাচ্ছেন জাকেরই। ব্যাটিংয়ে ছন্দহীনতার পাশাপাশি ভুল সিদ্ধান্তও তাকে ভুগছে। বাউন্ডারি না খুঁজে চেষ্টা করছেন শুধু শট খেলতে, তাও অনিয়ন্ত্রিতভাবে। আগের ম্যাচে ১১ বলে মাত্র ৩ রান এসেছে তানজিদ ও জাকেরের জুটিতে। ৪৯ বলে প্রয়োজন ছিল ৬৫ রান, অথচ জাকের খেলেন ১৮ বলের মধ্যে ৯টি ডট। সেই সময়ই মূলত ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায়।

শামীম হোসেনের অবস্থাও ভালো নয়। শট খেলতে গিয়েও টাইমিং পাচ্ছেন না, ফুটওয়ার্ক অনিশ্চিত। তাকে একাদশ থেকে বাদ দেওয়ার আলোচনাও চলছে। তার পরিবর্তে পারভেজ হোসেন ইমনকে দেখা যেতে পারে।

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, আক্রমণাত্মক হওয়ার সাহস দেখাতে পারছেন না ব্যাটাররা। নিরাপদ পথ বেছে নিয়ে ডট বল বাড়িয়ে নিজেরাই নিজেদের বিপদে ফেলছেন। মানসিকতা না বদলালে শেষ ম্যাচেও একই গল্পের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আবারও ম্যাচ শেষে লিটন দাসকে দুঃখপ্রকাশ করতে হতে পারে—সমর্থকদের হতাশা আরও বাড়বে।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!