চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয়দের হামলায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে লালকার্ড প্রদর্শন করেছে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে চবিয়ান পাঠচক্র এর উদ্যোগে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চবিয়ান পাঠচক্রের সভাপতি সৈয়ব আহমেদ সিয়াম। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান এবং বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়াকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মেইন গেটে নোটিশ টানিয়ে দেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, জামায়াত নেতা ও চট্টগ্রাম-৫ আসনের প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম স্থানীয়দের ‘নির্দোষ’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের ‘পৈতৃক সম্পত্তি’ দাবি করেছেন এবং নিজেকে ‘জমিদার’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এ ছাড়া বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলায় উস্কানি দেন। অন্যদিকে, সাবেক শিক্ষক ও জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান এক নারী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ বলেন, “সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ্যে বলেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থানীয়দের সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও হামলার সমর্থন আমাদের বিস্মিত করেছে। আমরা তার বিচার চাই।”
চবিয়ান পাঠচক্রের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা দেখেছি বিএনপি নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়া কীভাবে স্থানীয়দের উস্কে দিয়েছেন। অথচ তার নামে মামলা হয়নি। পাশাপাশি হাবিবুর রহমান স্যারের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য এবং শিবির নেতা হাবিবুল্লাহ খালেদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে।”
প্রতিবাদ সমাবেশে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়—
১. বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে মামলা করতে হবে।
২. সিরাজুল ইসলামকে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও জামায়াত থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
৩. হাবিবুর রহমানকে প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমা চাইতে হবে এবং জামায়াত থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
৪. ছাত্রনেতা হাবিবুল্লাহ খালেদকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং শিবিরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা নানা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়ান। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— “জামায়াতের জমিদারকে লালকার্ড”, “চাপ দিবেন না, মাথায় হাড় নাই”, “খাজনার বদলে ১৫০০ প্রজার রক্ত নিলি কেন?”, “৬০ বছরের অধিকার, ক্যাম্পাস কী তোর বাপ-দাদার?” ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবি না মানা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :