ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

এইচএসসি ফল খারাপ? কী ধরনের সন্দেহ হলে খাতা চ্যালেঞ্জ করা উচিত

আমার ক্যাম্পাস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫

এইচএসসি ফল খারাপ? কী ধরনের সন্দেহ হলে খাতা চ্যালেঞ্জ করা উচিত

ছবিঃ সংগৃহীত

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর)। ফলাফলে অসন্তুষ্ট বা নম্বর নিয়ে সন্দেহ থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য এবারও থাকছে খাতা পুনঃনিরীক্ষণ বা খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ। তবে এবারের আবেদন প্রক্রিয়ায় এসেছে নতুনত্ব—পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে অনলাইনে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন শুরু হবে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এবং চলবে আগামী ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। এ বছর শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো অফিসে সরাসরি আবেদন গ্রহণ করা হবে না। শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বোর্ডের ওয়েবসাইটে নির্দেশনা অনুসারে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাতা পুনঃনিরীক্ষা মূলত ফলাফলের সঠিকতা যাচাইয়ের একটি মাধ্যম, যেখানে যোগফল, নম্বর স্থানান্তর বা তথ্য রেকর্ডে কোনো ত্রুটি থাকলে তা সংশোধনের সুযোগ থাকে।

কখন খাতা চ্যালেঞ্জ করা যৌক্তিক

ফলাফলে অপ্রত্যাশিত পার্থক্য বা নির্দিষ্ট বিষয়ে অস্বাভাবিক নম্বর দেখা গেলে শিক্ষার্থীরা খাতা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। যেমন—

১. অপ্রত্যাশিতভাবে কম নম্বর পাওয়া:
প্রস্তুতি ভালো থাকা সত্ত্বেও আশানুরূপ ফল না পাওয়া গেলে মূল্যায়নে বা যোগফলে ভুল থাকতে পারে।

২. নির্দিষ্ট বিষয়ে অস্বাভাবিক ফলাফল:
সব বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেও কোনো একটি বা দুটি বিষয়ে কম নম্বর পাওয়া সাধারণত মূল্যায়নজনিত ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়।

৩. যোগফলে ভুল সন্দেহ হলে:
খাতায় প্রশ্নভিত্তিক নম্বর ঠিক থাকলেও মোট যোগফলে ভুল থাকতে পারে। পুনঃনিরীক্ষায় এই যোগফল পুনরায় যাচাই করা হয়।

৪. নম্বর স্থানান্তরে ভুলের সম্ভাবনা:
খাতার নম্বর ডাটাবেইসে স্থানান্তরের সময় ভুল সংখ্যা ইনপুট হলে রেজাল্টে ভিন্নতা আসে। পুনঃনিরীক্ষণ প্রক্রিয়ায় এসব যাচাই হয়।

৫. পাসের খুব কাছাকাছি অবস্থান:
শিক্ষার্থী যদি ১–২ নম্বরের জন্য ফেল করে, তবে পুনঃনিরীক্ষণে ফল পরিবর্তনের সম্ভাবনা থেকে যায়।

৬. গ্রেড উন্নতির সম্ভাবনা:
যারা গ্রেড সীমার কাছাকাছি অবস্থানে আছে (যেমন ৫৯, ৬৯ বা ৭৯), তারা পুনঃনিরীক্ষার মাধ্যমে গ্রেড উন্নতির সুযোগ পেতে পারেন।

৭. প্রশ্নপত্রের কোনো অংশ বাদ পড়েছে সন্দেহ হলে:
কখনও পরীক্ষক খাতার কোনো পৃষ্ঠা বা অংশ মূল্যায়ন করতে ভুলে যেতে পারেন। পুনঃনিরীক্ষণে এসব অংশ পুনরায় যাচাই হয়।

৮. দুই পত্রের মধ্যে অস্বাভাবিক পার্থক্য:
একই বিষয়ের দুই পত্রে নম্বরের ব্যবধান অস্বাভাবিক হলে তা যাচাই করা যৌক্তিক।

তবে মনে রাখতে হবে, খাতা চ্যালেঞ্জ মানে নতুন করে খাতা মূল্যায়ন নয়। বোর্ড শুধুমাত্র নম্বর যোগফল, স্থানান্তর ও রেকর্ড যাচাই করে। এটি সন্দেহ নিরসনের প্রক্রিয়া, নম্বর বৃদ্ধির নিশ্চয়তা নয়।

শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা যেন আবেদন করার আগে নিজেদের রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং বিষয় কোড ভালোভাবে যাচাই করে আবেদন সম্পন্ন করেন।

শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ন্যায্যতা যাচাইয়ের সুযোগ:
প্রতি বছর অসংখ্য শিক্ষার্থী পুনঃনিরীক্ষার মাধ্যমে নিজের ফল পরিবর্তনের সুযোগ পান। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া, যা ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থা বাড়ায়।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!