ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেছেন, সেনাবাহিনীর সত্যিকারের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হলে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, এটি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ইগো বা মর্যাদার বিষয় নয়; এটি রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, “বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের শাসনামলে গুম, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছিল।” গুম কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রায় ১৮শ গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এসবের শিকার হয়েছেন সাধারণ নাগরিক, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, নারী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এস এম ফরহাদ বলেন, এসব নৃশংসতার জন্য শুধু স্বৈরাচার হাসিনা ও তার আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দায়ী নয়, বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ অনেক সদস্যও জড়িত। গুমের পর ভিক্টিমদের অমানবিক নির্যাতন সভ্য সমাজে ঘৃণিত ও নিন্দনীয়।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক ভিন্নমত ও পরিচয়ের কারণে অসংখ্য নাগরিক, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষার্থীকে পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনকে অপব্যবহার করে ‘জঙ্গি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব সাজানো মামলা অনেকের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করেছে, পরিবারকে নিঃস্ব করেছে এবং সমাজে ভয়ের এক বিভীষিকাময় সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে।
ফরহাদ উল্লেখ করেন, “বিগত শাসনামলে রাষ্ট্রের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছিল। এর প্রভাব সেনাবাহিনীতেও পড়েছিল। যারা র্যাব, ডিজিএফআই বা বিভিন্ন বিশেষ এজেন্ডায় দায়িত্বে ছিলেন, তাদের মধ্যে অনেক কর্মকর্তা গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে।”
ডাকসু সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সেনাবাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত কর্মকর্তাদের বিচারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মর্যাদা আরও দৃঢ় হবে এবং সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠবে। অপরাধীদের সেইফ এক্সিট দেয়ার চেষ্টা বন্ধ করতে হবে এবং দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।”

আপনার মতামত লিখুন :