ঢাকা রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত রাখছে ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫

শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত রাখছে ভারত

ছবিঃ সংগৃহীত

সম্প্রতি ভারতের অংশ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার ইঙ্গিত আছে—এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞদের মধ্যে someরা। বিশেষ করে জিন্দাল স্কুলের অধ্যাপক ও দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক প্রফেসর স্রীরাধা দত্তের মতামত এই ধারনাকে তকমা দিয়েছে যে, ভারতের নীতি ও আচরণে আগের চেয়ে বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

পটভূমি ও সরকারি যোগাযোগ গত কয়েক মাসে ঢাকা থেকে নয়াদিল্লিতে কূটনৈতিক যোগাযোগ ও আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পাঠানো হয়েছে—যাতে ভারতের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল, যেখানে শেখ হাসিনা অবস্থান করছেন, সেখানে তাকে বিদেশে আশ্রয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়া বা রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলার অনুরোধ জানান হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তার অনুপ্রেরিত বক্তব্য স্থানীয় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে পারে এবং তা ডাকা সহিংসতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এমন অনুরোধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো প্রতিবেদন করেছে যে, ঢাকা ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ রাখছে।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত তার নীতিগত স্বার্থ ও সীমান্ত নিরাপত্তা বিবেচনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। প্রফেসর স্রীরাধা দত্ত ও অন্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারত এখন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুনভাবে মূল্যায়ন করছে এবং প্রকাশ্যে অতিরিক্ত রাজনৈতিক এক্সপোজারের ক্ষেত্রে সতর্কতা প্রদান করছে—ফলত: হাসিনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিংবা পাবলিক বক্তব্যে উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেছে। তারা আরও বলেন, ভারতের প্রধান উদ্বেগ হলো স্থানীয় নিরাপত্তা ও দু'পক্ষীয় সম্পর্কের স্থিতিশীলতা।

ঢাকা‑নয়াদিল্লি সম্পর্ক ও ভবিষ্যৎ বিবেচনা কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, ভারতের কাছ থেকে এই ধরনের নির্দেশ বা ইঙ্গিত আসা মানেই নয়াদিল্লির সে ক্ষেত্রে সরাসরি হস্তক্ষেপ—বরং এটি কৌশলগত সতর্কতা ও দ্বিপাক্ষিক পরামর্শের ফল। একইসঙ্গে বলা হচ্ছে, ভারতের এমন মনোভাব ভবিষ্যতে ঢাকায় নির্বাচিত সরকার এবং নয়াদিল্লির সম্পর্ক কিভাবে গড়বে তার ওপর নির্ভর করবে; কেউ বলছেন, যদি নতুন নির্বাচিত সরকার ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে, তাহলে জটিলতা কমবে।

ঢাকার অনুরোধ ও ভারতের প্রতিক্রিয়া সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছিল যে, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা আশ্বাস দিতে হবে—অর্থাৎ ভারত যাতে তাদের মাটিতে রাজনৈতিক কার্যক্রম করে বাংলাদেশে নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি না করে, সে দাবি ঢাকা তুলেছে। ভারতের সরকারি ঘোষণায় এ নিয়ে সরাসরি ব্যাখ্যা সীমিত ছিল; নয়াদিল্লির কূটনৈতিক কৌশল সাধারণত পরামর্শ ও আভাসে প্রকাশ পায়। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সরাসরি আনুষ্ঠানিক মন্তব্যের বদলে বহু ক্ষেত্রে মাউথপিস বা দ্বিপাক্ষিক চ্যানেলে সমাধান চাওয়া হয়ে থাকে।

সতর্ক বিবৃতি ও রাজনৈতিক পরিণতি বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, বিদেশে আশ্রয় প্রাপ্ত কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির বক্তব্য ও কার্যক্রম স্থানীয় এবং আঞ্চলিক রাজনীতি উসকে দিতে পারে; ফলে আশপাশের দেশগুলো তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক স্বার্থ অনুসারে আচরণ করে থাকে। বর্তমানে পরিস্থিতি বিবেচনায় — দিল্লি বা ঢাকা—কোনও পক্ষই স্পষ্টভাবে পুরোপুরি অনধিকারী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে; তবে ভবিষ্যতে ঘটনাচক্রে বিষয় বদলে যেতে পারে।

সংক্ষেপে বহুমাত্রিক কূটনৈতিক চিত্রে, ভারতের আচরণ ও বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ মিলিয়ে দেখা যায়—নয়াদিল্লি কিছুটা সতর্কতামূলক সংকেত দিয়েছে, যাতে বাংলাদেশবিরোধী কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য বা কার্যক্রম সীমিত রাখা যায়। তবে এই ইঙ্গিত তথা কূটনৈতিক ব্যবস্থা কিভাবে বাস্তবে প্রতিফলিত হবে—তার ওপর নির্ভর করবে দুই দেশের মধ্যে চলমান যোগাযোগ এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!