ঢাকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

কয়েকটি আসনের জন্য জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দেবে না এনসিপি: সারজিস আলম

আমার ক্যাম্পাস ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫

কয়েকটি আসনের জন্য জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দেবে না এনসিপি: সারজিস আলম

ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শুধু সংসদে কিছু আসন পাওয়ার জন্য জনগণের প্রত্যাশা বিসর্জন দিয়ে কোনো রাজনৈতিক জোটে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

রবিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “এনসিপি সংসদীয় আসনের লোভে জোট রাজনীতিতে অংশ নিতে চায় না। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—যে কোনো রাজনৈতিক দল যদি জুলাই সনদের প্রতিটি সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, বিচার প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতায় দৃঢ় থাকে, সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও তাদের সহযোগী স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধেও অবস্থান নেয়—তাহলে সেই নীতির ভিত্তিতেই আমরা জোট বিবেচনা করব। কিন্তু জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে কেবল কিছু আসনের জন্য জোট করার প্রশ্নই আসে না।”

তিনি আরও বলেন, “যদি কোনো নীতিগত সমঝোতার ভিত্তিতে জোট হয়ও, তাহলে তা হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির নামেই। সেক্ষেত্রে আমরা নিজেরা সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় যাব, অন্য কারও ছায়ায় নয়।”

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, “যখন অন্যান্য রাজনৈতিক দল কোনো সুস্পষ্ট নিশ্চয়তা ছাড়াই নির্বাচনমুখী হয়ে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে, তখন এনসিপি সাহসিকতার সঙ্গে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। আমরা চাই, সনদের বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা দেওয়া হোক এবং গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়া হোক। সেই নিশ্চয়তা পেলে আমরা বিনা দ্বিধায় জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব। কিন্তু কাগজে কলমে প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণকে প্রতারণা করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের আগামী রাজনীতিতে মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন ও বিচার ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা রক্ষার দায়িত্ব কেবল বিএনপি বা জামায়াত এককভাবে নিতে পারবে না। সেখানে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে এনসিপির ভূমিকা অপরিহার্য। আগামীর বাংলাদেশে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।”

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তার সামান্য অংশও পূরণ হয়নি। এক বছরে রাষ্ট্রীয় অগ্রগতির তেমন কোনো চিহ্ন নেই। প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে এখনো আগের স্বৈরাচারী কিংবা বিএনপি-জামায়াত ঘরানার লোকজনই প্রভাব বিস্তার করে আছে। সচিব থেকে ওসি পর্যন্ত সবাইকে দলের নয়, দেশের জন্য কাজ করতে হবে—না হলে ভবিষ্যতে কেউ দায় এড়াতে পারবে না।”

এ সময় তিনি বলেন, “এনসিপি এখন তৃতীয় শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে উঠে এসেছে। কিন্তু আমাদের আগে থাকা দুটি প্রধান দল দেশের সংকট নিরসনে দায়িত্বশীল ভূমিকা না নিয়ে বরং দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে, যা দুঃখজনক।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খান এবং সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জ জেলার সাবেক আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় সংগঠক খাইরুল কবির, সংগঠক সাঈদ উজ্জ্বল, এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দিদার শাহসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!