রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে মেট্রোরেলের একটি পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আবুল কালাম আজাদ (৩৬) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, হঠাৎ করেই মেট্রোরেলের ওপর থেকে ভারী ধাতব ওই যন্ত্রাংশ নিচে পড়ে সরাসরি আঘাত হানে আবুল কালামের মাথায়। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবুল কালাম আজাদ শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করতেন। ব্যবসায়িক কারণে তিনি নিয়মিত ফার্মগেট এলাকায় যাতায়াত করতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায় স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। তার ছেলে আব্দুল্লাহর বয়স ৫ বছর এবং মেয়ে সুরাইয়া আক্তারের বয়স ৩ বছর। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
দুর্ঘটনার আগের রাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন আবুল কালাম, যেখানে তিনি লিখেছিলেন—‘ইচ্ছে তো অনেক, আপাতত যদি জীবন থেকে পালিয়ে যেতে পারতাম।’ এর কয়েক ঘণ্টা পরই ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
নিহতের ভাবী আছমা আক্তার বলেন, “দুপুরে তার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল। বলেছিল, দু-এক দিনের মধ্যে বাড়ি আসবে এবং আমাকে ইলিশ মাছ কিনে রাখতে বলেছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরই শুনলাম সে আর নেই। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার চাই।”
নিহতের চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার বলেন, “ছোটবেলা থেকেই কালাম পরিশ্রমী ছিল। নিজের চেষ্টায় ঢাকায় ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিল। সরকারের অবহেলার কারণেই আজ আমাদের ভাইটি মারা গেছে। আমরা চাই, সরকার পরিবারটির পাশে দাঁড়াক।”
এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।”

আপনার মতামত লিখুন :