ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সহ-সভাপতি সাদিক কায়েম দাবি করেছেন গুম ও খুনের ঘটনায় মূল আর্থ-সহায়ক ও অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। তিনি বলেছেন, যারা এই সমস্ত জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করেছে, কোনো টালবাহানা বা ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।
সাদিক কায়েম শুক্রবার (রাত) গুম কমিশনের তথ্য ও প্রামাণ্যচিত্র নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করে এসব কথা বলেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত পনেরো বছরের শাসনামলে সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও বেসামরিক কাঠামো ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত হয়েছে এবং এখন এই বিচারের পথে নানা ষড়যন্ত্র চলছে—এটি মেনে নেওয়া হবে না।
সাদিক কায়েম তার প্রতিক্রিয়ায় বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন—ওয়ালীউল্লাহ, আল মুকাদ্দাস, ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া অনেক ব্যক্তির পরিবার দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করে আসছেন। তিনি বলেন, “যে যে পরিচয়েই থাকুক—খুনি, ধর্ষক, গুমকারী—তাদের কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীদের অগ্রিম ক্ষমা বা ছাড় থাকা চলবে না।”
ডাকসু সূত্রে জানা যায়, সাদিক কায়েম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদের নাম উল্লিখিত এক বিবৃতিতেও গুম, খুন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সামরিক, পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর কর্মকর্তা–কর্মচারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অতীতের এই ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায় রচনা করেছে এবং তার পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাদিক কায়েম বলেন, “দেশরক্ষার শপথ ও ইউনিফর্মের দায়িত্ববোধকে যারা পদদলিত করেছে—they must be held accountable.” (অনুবাদ: যারা দেশরক্ষার শপথ ও ইউনিফর্মের মর্যাদা লঙ্ঘন করেছে, তাদের জবাবদিহি করতে হবে)। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সব খুনী ও ধর্ষকের বিচার এ মাটিতেই হবে, ইনশাআল্লাহ।”
ছাত্রনেতা এই দাবিকে কেবল ব্যক্তিগত সমালোচনা হিসেবে সীমাবদ্ধ করেননি—তারা সামাজিকভাবে ও আইনি পথে দ্রুত আন্দোলন ও চাপ সৃষ্টি করে বিচারের দাবি জানাবেন বলে দিকও দিয়েছেন। এছাড়া গুম কমিশন ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য-প্রামাণ্যচিত্রগুলো ছাত্র সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বলে ডাকসুর শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ জানান।
বিতর্কিত এই দাবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে আদালত-কমিশন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের নজরকেড়ে নিয়ে আসছে—এবং স্থানীয় রাজনৈতিক পরিসরে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। প্রশাসনিক ও আইনগত প্রক্রিয়ায় এই অভিযোগগুলো কীভাবে অগ্রসর হবে তা এখনই স্পষ্ট নয়, তবে ছাত্রসমাজ দ্রুত ও শক্তভাবে ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করবে বলে ডাকসু জানিয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :