ক্যারিবিয়ান সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মেলিসা জ্যামাইকায় প্রবেশ করেছে। মার্কিন জাতীয় হারিকেন কেন্দ্রের (এনএইচসি) তথ্যমতে, ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭৫ মাইল বা ২৮২ কিলোমিটার, যা এটিকে ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার শক্তিশালী ঝড়ে রূপান্তরিত করেছে। এটি এই বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ঝড় হিসেবে বিবেচিত। অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ সমুদ্রপানি মেলিসাকে আরও শক্তিশালী করেছে, যার ফলে ঝড়ের সঙ্গে প্রচণ্ড বাতাস এবং প্রায় তিন ফুট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এনএইচসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতের পর কিউবা এবং হাইতিতেও ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে। বুধবার বাহামাস এবং টার্কস ও কাইকোস দ্বীপপুঞ্জেও ঝড়ের কারণে বিপর্যয়জনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শক্তিশালী ঝড়ের আগেই জ্যামাইকায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও হাইতি ও ডোমিনিকান রিপাবলিকেও চারজনের প্রাণহানির সঙ্গে মেলিসার প্রভাবকে যুক্ত করা হয়েছে।
দক্ষিণ জ্যামাইকার বিশেষ করে ঐতিহাসিক পোর্ট রয়াল শহরে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস সতর্ক করে বলেছেন, কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, সেতু, সড়ক, বন্দর ও বিমানবন্দরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের অঞ্চলে এমন ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঝড় সহ্য করার মতো অবকাঠামো নেই।”
সরকার প্রায় ২৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানোর জন্য বাস প্রস্তুত রেখেছে। জরুরি প্রতিক্রিয়ার জন্য ৩৩ মিলিয়ন ডলারের বাজেট এবং বীমা ও ঋণ সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড়গুলো আরও শক্তিশালী ও দ্রুতগতি হয়ে উঠছে।
জ্যামাইকার শিক্ষামন্ত্রী ডানা মরিস ডিক্সন বলেছেন, “আমরা এমন ঝড়ের মুখোমুখি হচ্ছি যা আগে কখনো দেখিনি।”
এনএইচসি জানিয়েছে, বাতাসের সর্বোচ্চ বেগ এবং নিম্ন কেন্দ্রীয় চাপের কারণে মেলিসা এই বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে রেকর্ড করা হচ্ছে। এতে আঘাত হালে জ্যামাইকায় ১৮৫১ সালের পর থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ের অভিজ্ঞতা হবে।
এদিকে, এনএইচসি-এর উপপরিচালক জেমি রহোম জানিয়েছেন, ঝড়ের ধীর গতির কারণে জ্যামাইকার কিছু এলাকায় আগামী চার দিনে প্রায় ১০০ সেন্টিমিটার (৪০ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। এতে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের ঝুঁকি তীব্রভাবে বাড়বে।

আপনার মতামত লিখুন :