ঢাকা বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়রকে হেনস্তার অভিযোগে ছাত্রদলের সম্পৃক্ততা না পাওয়ার দাবি

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৫

জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়রকে হেনস্তার অভিযোগে ছাত্রদলের সম্পৃক্ততা না পাওয়ার দাবি

ছবিঃ আমার ক্যাম্পাস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইসিটি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয়কে জুনিয়র শিক্ষার্থী কর্তৃক হেনস্তার অভিযোগের সাথে ছাত্রদলের সম্পৃক্ততা না পাওয়ার দাবি শাখা ছাত্রদলের। 


মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের গঠিত তদন্ত কমিটি এতথ্য জানান। 

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল শাখা ছাত্রদল। 
তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম শাওন ও রিয়াজ উদ্দিন অন্তর। উক্ত কমিটিকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। 

সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদনের ফলাফল হিসেবে বলা হয়, শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। প্রক্টর অফিসে জমা দেওয়া অডিও রেকর্ডে কোনো হুমকিমূলক শব্দচয়ন বা ছাত্রদল-সংক্রান্ত প্রমাণ মেলেনি। 

তদন্তে জানা যায়, অভিযোগটি পূর্বেই হাউজ টিউটরদের উপস্থিতিতে মীমাংসা করা হয়েছিল। এছাড়া কিছু বিপথগামী শিক্ষার্থী ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল জানায়, একটি মহল রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার উদ্দেশ্যে দ্বীন ইসলামের ভিডিও ব্যবহার করছে এবং তারা প্রশাসনের কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও দেখা গেছে যে-কোনো ঘটনায় ছাত্রদলের নাম জড়িয়ে দায় চাপানোর প্রবণতা ছিল। আমরা এই অপরাজনীতির তীব্র নিন্দা জানাই। দ্বীন ইসলাম যে অভিযোগ তুলেছেন, তা সম্পূর্ণ হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা সবাই আবাসিক শিক্ষার্থী, দ্বীন ইসলামও তাই। কে কোন সিটে উঠবে বা বদলাবে এটা হল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের বিষয়। এখানে ছাত্রদলের সম্পৃক্ততা নেই। তাহলে কেন ছাত্রদলের নাম টেনে আনা হলো, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘হলের সমস্যাটি ইতোমধ্যে প্রভোস্ট ও হাউস টিউটররা সমাধান করেছেন। অভিযুক্তরা মুচলেকা দিয়ে সব কিছু মেনেও নিয়েছে। এরপরও দ্বীন ইসলাম কেন মীমাংসিত বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালালো, তা স্পষ্ট নয়। আমরা মনে করি সে কারো প্ররোচনায় অথবা কেউ তার এই ভিডিও ব্যবহার করে ছাত্রদলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আমাদের দূরত্ব সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।’


ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কুচক্রী গোষ্ঠী ছাত্রদলের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, আমরা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়েছি এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ ঘটনায় ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শুধুমাত্র সংগঠনটিকে ব্লেম দেওয়ার জন্য একটি মহল এটি ব্যবহার করেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষার্থী নৈতিক অবস্থান থেকে পড়াশোনা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করুক। আমাদের প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয় যেন সঠিকভাবে ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়।’


উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয় ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের কয়েকজন তার কক্ষে এসে হুমকি দিয়েছেন এবং আগ্রাসী আচরণ করেছেন। ভিডিওতে তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি এখন আতঙ্কিত, শুধু নিশ্চিত করুন—ছাত্রদল আমার ক্ষতি করবে না। আমি কারো বিচার চাই না, শুধু স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে চাই।’

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!