স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টি জ্ঞান এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কয়েকজন শিক্ষার্থীর উদ্যোগে 'আমার প্লেট, আমার পুষ্টি' নামের একটি প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সমম্বয়ে গড়ে ওঠা 'এগ্রো পুষ্টি হাব' নামের একটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে এই প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। এই প্রকল্পে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা Millennium Fellowship এবং SUN Youth Network Bangladesh নামের দুই প্ল্যাটফর্মের সদস্য।
খাদ্যব্যবস্থায় তরুণ নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে হাবিপ্রবিতে তিন দিনব্যাপী 'ফুড সিস্টেমস ইয়ুথ লিডারশীপ ট্রেনিং' সম্পন্ন হয় গত সেপ্টেম্বর মাসে। এই প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা সম্মিলিতভাবে স্কুলভিত্তিক একটি প্রকল্প 'আমার প্লেট, আমার পুষ্টি' বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। প্রকল্পটির একাডেমিক সুপারভাইজার হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারা আখতার খাতুন।
প্রকল্পের অংশ হিসেবে হাবিপ্রবি স্কুলে ইতোমধ্যে একাধিকবার সার্ভে ও শিক্ষামূলক সেশন সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান প্রকল্পে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে হাতে কলমে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাবারের ধারণা দেওয়া ছাড়াও ফ্লিপকার্ড, ফুডকার্ড ও বই বিতরণ করা হয়। ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাবিপ্রবি স্কুলে একটি স্বাস্থ্যকর ফুড ক্যান্টিন স্থাপনের পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তাঁরা।
এই প্রকল্পে অংশ নেওয়া মো. দ্বীন ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা চাই স্কুল থেকেই শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্য অপচয় রোধের মানসিকতা গড়ে উঠুক যাতে তারা ভবিষ্যতে টেকসই খাদ্যব্যবস্থার নেতৃত্ব দিতে পারে। নিরাপদ খাদ্য ও সঠিক পুষ্টিজ্ঞান ছোটবেলা থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়াই আমাদের এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
প্রকল্পটি কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে দলীয় অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। একইসঙ্গে সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে লজিস্টিক সাপোর্ট ও শিক্ষামূলক উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে, যা প্রকল্পের ধারাবাহিক বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
চলমান এই প্রকল্পটির চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো স্কুল পর্যায়ে একটি টেকসই ফুড ক্যান্টিন প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বল্পমূল্যে পুষ্টিকর খাবার পাবে। দীর্ঘমেয়াদে এই উদ্যোগটিকে স্বনির্ভরভাবে পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

আপনার মতামত লিখুন :