জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই শিক্ষাবর্ষের ২০০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে “কবি মতিউর রহমান মল্লিক মেরিট অ্যাওয়ার্ড” প্রদান করেছে জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ মাঠে এক আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা স্মারক, সার্টিফিকেট, মগ, কলমদানি, পবিত্র কোরআন, সিরাতগ্রন্থ, উত্তরীয়, নোটপ্যাড ও কলম তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, “বিগত ১৭ বছর আমাদের মুসলিম পরিচয় দিতে হীনমন্যতায় ভুগতে হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধর্ম ও মতের চর্চা চলবে—কেউ কোনো বৈষম্যের শিকার হবে না। মানুষ হিসেবে আমরা সবাই সমান।”
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, মতিউর রহমান মল্লিক সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। আজ আমাদের এই অবস্থান নিয়ে অহংকার করা যাবে না। অহংকার মানুষকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। এ সফলতার পেছনে মা-বাবা, পরিবার, আত্মীয় স্বজন, শিক্ষকসহ অনেকের সাপোর্ট রয়েছে। আপনাদের কাছে আমার বার্তা হলো, আপনারা সৎ থাকবেন। নিজেদের সৎ, দেশপ্রেমিক ও দক্ষতাসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলবেন।
ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল) জবির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু লায়েক বলেন, “ছাত্রশিবিরের এই ধরনের প্রোগ্রাম আসলে প্রশাসনেরই করা উচিত ছিল। স্বীকৃতি মানুষকে ভালো কাজের জন্য উদ্বুদ্ধ করে।”
নারী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আঞ্জুমান আরা বলেন, “আমি ছাত্রশিবিরকে ডাকসু নির্বাচনের পর থেকেই পর্যবেক্ষণ করছি। মেরিট অ্যাওয়ার্ডের মতো উদ্যোগ অন্য কোনো সংগঠনকে করতে দেখিনি। সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এ ধরনের উদ্যোগ প্রয়োজন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, “আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এখন বিভক্ত। অথচ অতীতে মাদরাসাশিক্ষিত ব্যক্তিরাই বিশ্ব দরবারে স্মরণীয় হয়ে ছিলেন।”
অনুষ্ঠানে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, “যে ছেলে ক্লাস ৬ ও ৭-এ ফেল করতাম, সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আবার আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবো ভাবিনি। ছাত্রশিবির মেধাবীদের মূল্যায়ন করে, এটা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র হল-১ এর প্রভোস্ট মো. আসাদুজ্জামান সাদি, কৃষিবিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. আলী আফজাল, বোটানি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন :