আসছে ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন। তবে মূল ভোটের আগেই গত শনিবার শুরু হয়েছে আগাম ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া। শহরের নির্বাচন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দিনেই প্রায় ৮০ হাজার মানুষ ভোট দিয়েছেন।
ভোটকেন্দ্রে আসা অনেক ভোটার জানিয়েছেন, নিউইয়র্কের ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এখন তাদের বড় দুশ্চিন্তা। অনেকেই বলেছেন, যদি তাদের সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী না হন, তবে এই ব্যয়বহুল শহরে থাকা তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। শহরটিকে আবারও সাধারণ নাগরিকদের নাগালের মধ্যে আনতে পারার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জিতছেন জোহরান মামদানি।
নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানায়, আগাম ভোটের প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ম্যানহাটানে, প্রায় ২৪ হাজারের বেশি। এরপর ব্রুকলিনে ২২ হাজার, কুইন্সে ১৯ হাজার, ব্রংক্সে ৮ হাজারের কাছাকাছি এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ভোট পড়েছে। নির্বাচন কর্তৃপক্ষ আশা করছে, পরের দিন অর্থাৎ রোববার আরও বেশি মানুষ ভোট দিতে আসবেন।
ভোটারদের মতে, এবারের নির্বাচনে তাদের প্রধান ইস্যু হলো জীবনযাত্রার খরচ, অভিবাসন, শিক্ষা, গৃহহীনতা, অপরাধ ও পুলিশ ব্যবস্থা। অনেকে বলছেন, এই নির্বাচন তাদের জীবনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। কারণ, পছন্দের প্রার্থী পরাজিত হলে নিউইয়র্কে থাকা তাদের জন্য আর বাস্তবসম্মত হবে না।
ব্রংক্সের ভোটার লানসানা কেইতা বলেন, “আমার পাঁচজন বন্ধু ইতোমধ্যেই শহর ছেড়ে চলে গেছেন। কারণ, এখানে থাকা এখন বিলাসিতা হয়ে গেছে। এবারের নির্বাচনে কে জিতবেন, তার ওপর নির্ভর করছে আমি নিউইয়র্কে থাকব কিনা।”
আগাম ভোটের প্রথম দিন তিনজন মেয়র প্রার্থীই প্রচারণায় মাঠে ছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বলেন, “নিউইয়র্কবাসীর প্রয়োজন এমন একজন মেয়র, যিনি কাজের মাধ্যমে প্রমাণ দিতে পারেন। আমার মতে, মূল লড়াই হবে আমার ও জোহরান মামদানির মধ্যে।”
রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া বলেন, “ভোটের ফল নির্ধারণ করবে মানুষ। কুয়োমো ও অ্যাডামস দুর্নীতিগ্রস্ত; আর মামদানি নতুন মুখ, অভিজ্ঞতা সীমিত।”
এদিকে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মামদানি ব্রুকলিনে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “আমি নির্বাচনের দিন ভোট দেব। তবে যারা আগাম ভোট দিচ্ছেন, তাদের বলছি—এটাই সুযোগ এই শহরকে আবার সবার জন্য সাশ্রয়ী করে তোলার।”
সব মিলিয়ে, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎকণ্ঠা। শহরের হাজারো মানুষের কাছে এই ভোট কেবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং টিকে থাকার এক বাস্তব সংগ্রাম।

আপনার মতামত লিখুন :