কিডনি মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি। দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত উপাদান ছেঁকে শরীর সুস্থ রাখার মূল দায়িত্বই পালন করে কিডনি। তবে অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, বয়স, অতিরিক্ত লবণ বা প্রসেসড খাদ্য গ্রহণ, ধূমপান-অ্যালকোহল সেবনসহ বিভিন্ন কারণে কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে পারে। সময়মতো যত্ন না নিলে এটি কিডনি বিকল হয়ে জীবনের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
সাধারণত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে কিডনি সুস্থ থাকে—এ তথ্য সবারই জানা। তবে পানি ছাড়াও আরও কিছু প্রাকৃতিক পানীয় রয়েছে, যা কিডনির প্রাথমিক ক্ষতি প্রতিরোধ এবং কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এসব পানীয় প্রদাহ কমায়, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে এবং কিডনি কোষ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কিডনি সুস্থ রাখতে সহায়ক ৫ প্রাকৃতিক পানীয়—
১. আদা–পুদিনা চা
আদায় থাকা জিঞ্জেরল কিডনির প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে কার্যকর। অন্যদিকে পুদিনা মূত্রনালীর জ্বালা কমিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। আদা ও পুদিনা একসাথে ফুটিয়ে চা বানালে তা কিডনির ফিল্টারিং ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এতে একটি লেবুর ফালি যোগ করলে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও বাড়ে, যা কিডনিকে আরও সুরক্ষা দেয়।
২. গ্রিন টি
গ্রিন টিতে রয়েছে পলিফেনলসহ শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট EGCG, যা কিডনিকে গ্লুকোজজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি কমে এবং রক্ত পরিশোধনের প্রক্রিয়া উন্নত হয়। তবে এর ক্যাফেইনের পরিমাণ কম হলেও অতিরিক্ত পান না করাই ভালো।
৩. ত্রিফলা
আমলকি, হারিটকি ও বীভীতকি দিয়ে তৈরি ত্রিফলা আয়ুর্বেদে কিডনি পরিষ্কারক টনিক হিসেবে পরিচিত। এতে থাকা ভিটামিন সি এবং গ্যালিক অ্যাসিড টিস্যু সুরক্ষা, প্রদাহ কমানো ও কোষ পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি এটি হজম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা পরোক্ষভাবে কিডনির জন্যও উপকারী।
৪. সেলারি (ধনিয়া) জুস
সেলারি বা ধনিয়া মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে, ফলে শরীরের বর্জ্য দ্রুত বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিডনির প্রদাহ এবং স্ফটিক জমা হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সেলারি জুস পান করলে কিডনির কাজের গতি বাড়তে পারে এবং পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে।
৫. ড্যান্ডেলিয়ন রুট টি (ধুলাখেলা চা)
প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক এই ভেষজ চা শরীরের জমে থাকা জল ও টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ড্যান্ডেলিয়ন প্রদাহ কমিয়ে কিডনি ও লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত করে। নিয়মিত পান করলে মূত্র প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং কিডনি আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।
সতর্কবার্তা
এ তথ্য শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়েছে। যাদের কিডনি রোগ নির্ণয় করা হয়েছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এসব পানীয় সেবন করতে হবে। বিশেষ করে ডায়ালাইসিস রোগীদের জন্য কিছু প্রাকৃতিক পানীয় ক্ষতিকর হতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

আপনার মতামত লিখুন :