নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনীত প্রার্থী জোহরান মামদানি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন। জনমত জরিপে তিনি এগিয়ে থাকায় ইতিহাস গড়ে শহরের প্রথম মুসলিম, দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ও ১০০ বছরের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
মামদানি আগে একজন হিপ হপ শিল্পী ও আবাসন উপদেষ্টা ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেমব্লিম্যান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে আছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্প্রতি তাকে ফোন করে নির্বাচনী প্রচারণার প্রশংসা করেছেন।
মামদানি গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। তার নির্বাচনী এজেন্ডার মূল বিষয়গুলো হলো সাশ্রয়ী জীবনযাপন, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, সর্বজনীন শিশু দিবাযত্ন, বাসা ভাড়া না বাড়ানো, বিনামূল্যে বাস পরিষেবা এবং সরকারিভাবে মুদি দোকান প্রতিষ্ঠা। জনসাধারণের কাছে এই বার্তা জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
তবে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। মামদানির নির্বাহী অভিজ্ঞতা সীমিত, ফলে তিনি কীভাবে সম্ভাব্য ফেডারেল হস্তক্ষেপ বা ট্রাম্প প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি করপোরেশন ও কোটিপতিদের ওপর নতুন কর আরোপ করে বিশাল এজেন্ডার জন্য ৯০০ কোটি ডলার রাজস্ব আনার প্রস্তাব দিয়েছেন। সমালোচকেরা হিসাব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন, যদিও গভর্নর ক্যাথি হোচুল কিছু পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছেন।
প্রাইমারিতে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো। কুওমো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন এবং মামদানি সম্পর্কে ব্যবসায়ীবিরোধী বলে অভিযোগ তুলেছেন। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া দুজনকেই বিদ্রুপ করেছেন।
মামদানির রাজনৈতিক অবস্থান কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন হয়েছে। ২০২০ সালে তিনি পুলিশ তহবিল কমানোর আহ্বান করেছিলেন, কিন্তু এখন জননিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তিনি পুলিশের একটি নতুন কমিউনিটি সেফটি বিভাগ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে সমর্থন অপরিবর্তিত আছে, যা কিছু বিতর্ক তৈরি করতে পারে।
ডেমোক্র্যাট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মামদানির উত্থান পার্টির মধ্যপন্থি ও প্রগতিশীল সদস্যদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি করেছে। রিপাবলিকানরা তাকে সমাজতন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরছে। মামদানি জানিয়েছেন, বিরোধিতা থাকবেই, তবে জনসমর্থন তার চেয়ে বেশি।

আপনার মতামত লিখুন :