জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের সময় নিয়ে ছাত্রনেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। ছাত্রদল নির্বাচন পেছানোর দাবি করেছে, তবে ছাত্রশিবির ঘোষণা করা তারিখ ২৭ নভেম্বরেই নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। ছাত্রদলের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন একটি বিশেষ গোষ্ঠীর সুবিধার্থে তড়িঘড়ি করছে। পাল্টা ছাত্রশিবিরও একই অভিযোগ তুলে নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে বলেছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশক্তি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
গত রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র সংগঠনের নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ডাকসু, জাকসু, চাকসু ও রাকসুর তপশিল ঘোষণার পর প্রার্থীরা দুই থেকে চার মাস সময় পেয়েছেন। কিন্তু ২৭ নভেম্বর নির্বাচনের ঘোষণা হলে নির্বাচনী কর্মসূচি পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন না। তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য নির্বাচনের ৯৬ ঘণ্টা আগে সাংগঠনিক কার্যক্রমের সুযোগ থাকা প্রয়োজন।
নির্বাচন কমিশন সভায় একটি খসড়া তপশিল প্রদর্শন করে, যেখানে ১০ ডিসেম্বর নির্বাচন করার প্রস্তাব ছিল। ছাত্রদল তা মানতে নারাজ এবং আরও পেছানোর দাবি জানিয়েছে। তবে ছাত্রশিবির জোর দিয়ে বলেছেন, পূর্বনির্ধারিত তারিখ ২৭ নভেম্বরই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, যৌক্তিক সময় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত পরে ঘোষণা করা হবে।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলন করেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, “নির্বাচন কমিশন একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে এবং বিশেষ গোষ্ঠীর সুবিধা দিতে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। ২৭ নভেম্বর নির্বাচন বাধ্যতামূলক।” তিনি বলেন, তপশিল বিলম্বিত হলে শীতকালীন ছুটির কারণে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন না।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক মো. ফয়সাল মুরাদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ছাত্রশিবির নির্বাচন দ্রুত করার চেষ্টা করছে, আর ছাত্রদল পেছাতে চাচ্ছে। এতে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
এর আগে ২৯ অক্টোবর জকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত বিধিমালা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পরদিন নির্বাচনী আচরণবিধি প্রকাশিত হয়। ছাত্রসংগঠনগুলোর দাবিতে গতকাল মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আপনার মতামত লিখুন :