জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ইতোমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি।
তিনি বলেন, “সঠিক তথ্য আমাদের কাছে আছে। তবে তদন্তের স্বার্থে সবকিছু এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমরা এরইমধ্যে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। আশা করছি আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে আপনাদের সুসংবাদ দিতে পারবো।”
জোবায়েদের জানাজা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “জোবায়েদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছে, যার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এজন্য গণমাধ্যমের কথা বিশ্বাস করবেন না। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আসামি ধরতে সময় লাগতে পারে, তবে প্রকৃত ঘাতকদেরই আমরা গ্রেফতার করবো। তাদের ধরতে পারলেই জানা যাবে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না।”
এদিন একই অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, “জোবায়েদের বড় ভাই সৈকত ৪৯তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু জোবায়েদ সে খুশির খবর জেনে যেতে পারলো না। এ ঘটনায় প্রকৃত হত্যাকারীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। আমাদের দাবি— কোনো ধরনের ফাঁকফোকর আমরা দেখতে চাই না। আমরা প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার দেখতে চাই।”
এছাড়া জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন বলেন, “আগামী ২ দিন শোক দিবস সভা ও শোক র্যালি পালন করবো। আমরা আগামী ১০ ঘণ্টা আলটিমেটাম দিলাম। যদি আমাদের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না দেখি তাহলে পরবর্তী কর্মসূচি দেবো। এখানে পুলিশ প্রশাসন যারা, বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে এই পুলিশকে জনগণের শত্রু বানানো হয়েছিল। আমার শিক্ষার্থীর বাবা-চাচাকে কেন পাঁচ ঘণ্টা বসিয়ে রাখলো, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। আমরা জনগণের জন্য কষ্টের কারণ হতে চাই না, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে চাই। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এই বিষয়ে এক মুদ্রা পরিমাণ ছাড় দেবো না। স্বৈরাচার পরবর্তী সময়ে আমরা এই ওসি চাই না।”
জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, “আমরা শুরু থেকেই ছিলাম। আমরা প্রকৃত দোষী গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত পাশে থাকবো। আমাদের পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।”
এর আগে রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর বংশাল এলাকার নূরবক্স রোডের একটি ভবনে টিউশনি করতে গিয়ে বাসার নিচে ছুরিকাঘাতে নিহত হন জোবায়েদ। আহত অবস্থায় সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে গিয়ে তিনতলা থেকে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
জোবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ছিলেন। তার মৃত্যুতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে।
আপনার মতামত লিখুন :