ঢাকা বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

জুবায়েদের মৃত্যুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক সভা অনুষ্ঠিত 

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫

জুবায়েদের মৃত্যুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক সভা অনুষ্ঠিত 

ছবি: আমার ক্যাম্পাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের (১৫তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য মো. জুবায়েদ হোসেন নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসভার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবন প্রাঙ্গণে এ শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়। শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, পিএইচডি। জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডকে মর্মান্তিক ও অগ্রহণযোগ্য বলে আখ্যায়িত করে উপাচার্য বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্যই এক গভীর শোক ও বেদনার। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বর্তমান প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আবেগ ও অনুভূতি সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করে এবং শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডের বিচার যেন শুধু গ্রেফতার প্রক্রিয়াতেই সীমাবদ্ধ না থাকে; দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট থাকবে। ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেই প্রত্যাশা করছি।’

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্‌দীন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, ‘জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের আমাদের সকলের দাবি। আমাদের শিক্ষার্থীরা টিউশন করে, মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের জীবনের পথ তৈরি করে, কোনো দয়া বা অনুগ্রহের ভিত্তিতে নয়। তাই তাদের প্রতি যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান প্রদর্শন করা সমাজের প্রত্যেকের দায়িত্ব। যেসব স্থানে আমাদের শিক্ষার্থীরা টিউশন করে, সেসব অভিভাবকদেরও তাদের প্রতি দায়িত্বশীল ও শ্রদ্ধাশীল আচরণ করা উচিত।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্‌দীন বলেন, ‘জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শুধুমাত্র গ্রেফতারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে দ্রুততার সঙ্গে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। বিচারের কার্যক্রম যেন বিলম্বিত না হয়, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী মামলাজনিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হলে সেই মামলার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একজন আইনজীবী নিয়োগ করা উচিত। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য একটি বিশেষ ফান্ড গঠনেরও প্রস্তাব রাখছি।’
শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু সাইদ মো. রিপন রউফ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন।

সভায় জুবায়েদের সহোদর বড় ভাই সৈকত হোসেন, বিভাগীয় শিক্ষকবৃন্দ, সহপাঠী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা জুবায়েদের স্মৃতিচারণ করেন এবং তার হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের দাবি জানান। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন দফতরের পরিচালক, ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর আরমানিটোলার, নূরবক্স লেনের রৌশান ভিলা নামক একটি বাসার সিঁড়ি থেকে জবি শিক্ষার্থীর জুবায়েদ হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জুবায়েদ হোসেনের হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী (২১ ও ২২ অক্টোবর) শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং শিক্ষার্থী-শিক্ষকবৃন্দসহ সকলে কালো ব্যাজ ধারণ করেন। এ ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছর পূর্তি অনুস্ঠান স্হগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন |

আমার ক্যাম্পাস/রিয়ন

Link copied!