নিউইয়র্ক সিটিতে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত মেয়র নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী ও মুসলিম বংশোদ্ভূত রাজনীতিক জোহরান মামদানি। নির্বাচনের আগমুহূর্তে তাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক, যার সূত্রপাত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য থেকে।
নির্বাচনের আগের দিন সোমবার ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিয়ে সতর্ক করে বলেন, যদি মামদানি নির্বাচিত হন, তবে নিউইয়র্ক সিটির জন্য ফেডারেল তহবিল সীমিত করে দেওয়া হবে। ট্রাম্পের ভাষায়, “একজন কমিউনিস্টের নেতৃত্বে শহরের অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে পড়বে, আমি ভালো অর্থ অপচয় করতে চাই না।”
ট্রাম্প আরও বলেন, শহরটির ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য সাবেক গভর্নর অ্যানড্রু কুমোকেই ভোট দেওয়া উচিত। তিনি কুমোকে “সক্ষম প্রশাসক” হিসেবে উল্লেখ করে ভোটারদের আহ্বান জানান, “তাকে পছন্দ করুন বা না করুন, আপনার ভোট কুমোকেই দিতে হবে। মামদানির নেতৃত্বে এই শহর নিরাপদ থাকবে না।”
প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যে মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, একজন বর্তমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে এভাবে সরাসরি অবস্থান নেওয়া কতটা নৈতিক বা গ্রহণযোগ্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে ভোটারদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
অন্যদিকে জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেট প্রার্থী জোহরান মামদানি এখনো জনসমর্থনে এগিয়ে আছেন। প্রাইমারিতে পরাজিত হয়ে অ্যানড্রু কুমো এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, আর রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া বেশ পিছিয়ে রয়েছেন। ট্রাম্প নিজের পোস্টে স্লিওয়াকেও সমালোচনা করে বলেন, “স্লিওয়াকে ভোট দেওয়া মানে মামদানিকেই ভোট দেওয়া।”
কুইন্সে জন্ম নেওয়া ট্রাম্প প্রায়ই নিউইয়র্ককে নিজের ‘প্রথম বাড়ি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই শহর একসময় ছিল সমৃদ্ধির প্রতীক, কিন্তু মামদানির মতো প্রার্থীরা সেটিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে।” তিনি দাবি করেন, সফল নেতৃত্বের অভাবে শহরটি অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন অতীতেও ডেমোক্রেটদের নিয়ন্ত্রণে থাকা শহরগুলোতে ফেডারেল অনুদান কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটি প্রায় ৭.৪ বিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিলের ওপর নির্ভরশীল, যা শহরের অবকাঠামো, জননিরাপত্তা ও সামাজিক খাত পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আজকের ভোটকে কেন্দ্র করে শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল শুধু নিউইয়র্ক নয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

              
                            
                            
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
                                          
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
আপনার মতামত লিখুন :