ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ব্যালট বাক্স বহনকালে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ফোন কেড়ে ভিডিও ডিলিট করার অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫

ব্যালট বাক্স বহনকালে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে  ফোন কেড়ে ভিডিও ডিলিট করার অভিযোগ

ছবিঃ সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকুস) ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি ভেঙে বুধবার রাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন দুই ছাত্রদল নেতা। তাদের ছবি ধারণ করায় সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জাকসু নির্বাচনের ব্যালট বাক্স পরিবহনের সময় ছাত্রদলের ওই দুই নেতা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছিলেন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন; যে কারণে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের সিনেট ভবনের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত দুই ছাত্রদল নেতা হলেন, জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক ওসমান সরদার দৈনিক যায়যায়দিনের জাবি প্রতিনিধি। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাতে তথ্য সংগ্রহে ওই সাংবাদিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি দেখতে পান ব্যালট বাক্স নিয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে কর্মকর্তারা বের হচ্ছেন। তাদের পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছেন ছাত্রদলের ওই দুই নেতাসহ আরো কয়েকজন। তিনি তখন দৃশ্যটি মোবাইলে ধারণ করেন। বিষয়টি নজরে এলে ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান রোজেন সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভিডিওটি ডিলিট করে দেন। সাংবাদিক পরিচয় দিলে এমন ভিডিও আর ধারণ না করতে বলেন তিনি।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক ওসমান বলেন, “ওই সময় আমি ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়ার ভিডিও করছিলাম। পেছনে ছাত্রদলের বাবর ও রোজেন ছিলেন। রোজেন আমার কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে আমার ফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করে দেন। এই ঘটনায় আমি খুবই শঙ্কিত। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তাহলে কী অবস্থা হতে পারে?”

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। ডাকসুতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়জয়কার অবস্থার এক দিন পরই জাকসুর ভোট হচ্ছে। ফলে জাকসুতেও চোখ রয়েছে সবার। অবশ্য সাবির্ক প্রস্তুতি নিয়ে ভোটগ্রহণের যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করার তথ্য দিয়েছে জাবি কর্তৃপক্ষ।

জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবরকে ফোন করা হলে তিনি এমন কোনো ঘটনার তথ্য অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি তো ওইখানেই ছিলাম। ভিডিও ডিলিট করে নাই। কী ভিডিও ডিলিট করছে, সেটাও তো জানি না। কোনো ভিডিও ডিলিট করে নাই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।” 

জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার বলেন, “এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

গত ৯ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ বি এম আজিজুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসে সাবেক শিক্ষার্থী, অতিথিসহ যে কোনো ধরনের বহিরাগত ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন না। 

জাবি ছাত্রদল আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম আবর্তনের (২০০৯-১০) রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেন ৪০তম আবর্তনের (২০১০-১১) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা দুজনেই ক্যাম্পাসের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। জাবি প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, তারা দুজনই নির্বাচন চলাকালীন ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারেন না।
 

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!