চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে শাখা ছাত্রশিবির। কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনা না করেই ভোটার ও প্রার্থীদের বয়সসীমা তুলে দিয়ে একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগগুলো তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শাখা সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, “প্রশাসন কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনা না করেই বিশেষ একটি ছাত্রসংগঠনকে একপাক্ষিক সুবিধা দিতে ভোটার ও প্রার্থীদের বয়সসীমা তুলে নিয়েছে। আমরা মনে করি, একটি দলের নেতাদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিয়ে কোনো আলোচনা ছাড়াই তাদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই বয়সসীমা তুলে দেওয়া হয়েছে।” তিনি প্রশাসনকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সিদ্ধান্তের স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়ার দাবি জানান।
এই বিষয়ের সাপেক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী আরও বলেন যে, ছাত্রশিবির শুরু থেকেই প্রস্তাব দিয়েছিল যেন শুধুমাত্র নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। কিন্তু প্রশাসন প্রথমে এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করে ৩০ বছরের বয়সসীমা নির্ধারণ করে। পরে দেখা যায়, ছাত্রদল নেতাদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিয়ে তাদের চাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়। কারণ, শুরুতে নির্ধারিত বয়সসীমা ওই নেতাদের অন্তর্ভুক্তির বাইরে ছিল। তাই পরবর্তীতে, কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই, কেবল ছাত্রদলকে সুবিধা দিতেই প্রশাসন বয়সসীমা তুলে দিয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা মনে করি মানবিক বিবেচনায় ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া শিক্ষার্থীদের সুযোগ একাডেমিক পরিসর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। অন্যথায় এটা প্রমাণিত হবে যে, তাদেরকে শুধু চাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্যই ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না।”
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রশিবির আরও কয়েকটি দাবি জানায়, যার মধ্যে ছিল:
গণতন্ত্র ও সংবিধানের আলোকে একটি শক্তিশালী চাকসু গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা।
অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিয়েই চাকসু নির্বাচন পরিচালনা করা।
চাকসু নির্বাচনে যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে সাধারণ সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট সম্পাদক পদে ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
প্রশাসনের মধ্যে থাকা রাজনৈতিক প্রভাব ও পক্ষপাতিত্ব দূর করে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ পারভেজ উদ্দিন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ইব্রাহিম রনি, প্রচার সম্পাদক ইসহাক ভূঁইয়া এবং শিক্ষা সম্পাদক মোনায়েম শরীফ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :