ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফুটবল মাঠে সাংবাদিকদের ওপর অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের হামলা ও হেনস্তার ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই ঘটনায় সীমিত সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় আরও নয়জন শিক্ষার্থীকে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে এসব তথ্য জানানো হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, গত ১২ জুলাই অর্থনীতি বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদকদের মধ্যে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনার তদন্তে তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে গত ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ২৭১তম সিন্ডিকেট সভার প্রস্তাব অনুযায়ী সিদ্ধান্ত ৩৮-এ মোতাবেক এ নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
এক অফিস আদেশে বলা হয়– অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান (রোল নং ২০০৭০৭৮) সাংবাদিক রবিউলকে তলপেটে লাথি মারেন, সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহর মোবাইল রিসেট দেন এবং সেটি মেডিকেল সেন্টারে ফেলে রেখে আসেন এবং তার বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বরাতে প্রক্টর বরাবর মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করার কারণে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
অপর এক অফিস আদেশে বলা হয়– একই শিক্ষাবর্ষের আফসানা পারভীন তিনা (রোল নং ২০০৭০৫১) কর্তৃক সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহর মোবাইল কেড়ে নেওয়া ও উসকানিমূলক আচরণের মাধ্যমে ঘটনার মাত্রা তীব্র করার অভিযোগে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন।
অপর আরেক অফিস আদেশে বলা হয়– এছাড়াও একই বিভাগ ও ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াজ মোর্শেদ (রোল নং ২০০৭০২০) তার বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বরাতে প্রক্টর বরাবর মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করার এবং ঘটনা ত্বরান্বিতকরণে ও ঘটনা সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধে নাহিদকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রমানিত হওয়ায় দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন।
এ ছাড়া তদন্তে সীমিত সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় নয়জন শিক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়েছে। তারা হলেন—২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল ইসলাম (রোল নং ২২০৭০০৪), মিল্টন মিয়া (অয়াজিল) (রোল নং ২২০৭০২৫), মশিউর রহমান (রোল নং ২২০৭০১৩), রাকিব হোসেন (রোল নং ২২০৭০১৬);
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সৌরভ দত্ত (রোল নং ২০০৭০১৪), মিনহাজুল আবেদীন (রোল নং ২০০৭০০৮), সাব্বির হোসেন (রোল নং ২০০৭০০২), সৌরভ হোসেন সজীব (রোল নং ২০০৭০১৩); এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফরিদুল আলম পান্না (রোল নং ১৯০৭০৭৯)।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হলো।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্তসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাটি ভিডিও করতে গেলে তিন সাংবাদিককে মারধর ও এক সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয় ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর ১৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাঃ মিজানুর রহমান এবং সদস্য সচিব ছিলেন সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিল্লাতুল করিম।

আপনার মতামত লিখুন :