বর্তমানে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ওয়াইফাই ভিত্তিক উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা সহজলভ্য হলেও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) এখনো ব্যবহারযোগ্য হয় নি কেন্দ্রীয় ইন্টারনেট ব্যবস্থা। এতে শিক্ষা ও গবেষণার কাজে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব জায়গায় পর্যাপ্ত রাউটার এবং তাতে ইন্টারনেট ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ সময় সেই ইন্টারনেট মোবাইল-ল্যাপটপে সংযোগই পায় না। সংযোগ পেলেও অনলাইনে ক্লাস দেখার সময় হঠাৎ করেই আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । একটি বড় পিডিএফ ডাউনলোড করতে হলে লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন অভিযোগ জানিয়ে আসলেও মিলছে না কোন কার্যকরী সমাধান। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো সমাধান হয়নি এসবের। তাই ধীরগতির কারণে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ব্যবহার করতে হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট। যার ফলে আর্থিকভাবেও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকেই।
চুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাফি সুইম বলেন, একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ। কিন্তু চুয়েটের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট ব্যবহারে নানান সমস্যার শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩০ শতাংশ সময় ইন্টারনেট একেবারেই সংযোগ হয় না। আবার সংযোগ পাওয়া গেলেও বারবার নেটওয়ার্কের ব্লিংকিং সমস্যার কারণে তা ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। এর ফলে জরুরি একাডেমিক কাজ, অনলাইন ক্লাস, গবেষণা ও প্রজেক্ট সাবমিশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আমরা মনে করি, এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান এখন সময়ের দাবি।
ইলেকট্রিক এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জানে আলম বলেন, ওয়াইফাই সমস্যার অভিযোগ নতুন নয়। বছরের পর বছর শিক্ষার্থীরা এই ভোগান্তির কথা বলে আসছেন। ফেসবুক গ্রুপে, হল প্রোভোস্টদের কাছে এমনকি উপাচার্য মহোদয়ের কাছেও বিষয়টি বহুবার জানানো হয়েছে। কিন্তু ফলাফল কী? পরিবর্তন কিছুই হয়নি। আমরা মনে করি ফাইবার বা কেবল লাইন সংযোগ দিলে সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব।
এখন প্রশ্ন হলো-সমস্যাটি কি প্রযুক্তিগত? যদি তাই হয়, তবে দীর্ঘ সময়েও কেন সমাধান হলো না? নাকি এ বিষয়ে তদারকি করার মতো কোনো দায়বদ্ধ দল চুয়েটে নেই?
এই সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে প্রশাসন কি ভাবছে তা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিডিরেনের সাথে কথা বলে চুয়েট শিক্ষার্থীদের রুমে রুমে আরো উন্নত সেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে বড় প্রকল্পের অধীনে এই কাজটি সম্পৃক্ত থাকায় এবং আরো বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এই কাজের সাথে সংযুক্ত থাকায় কাজটি শুরু হতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়তই যোগাযোগ করছি এবং আশাকরছি শীঘ্রই এই দুর্ভোগের সমাধান হয়ে যাবে এবং শিক্ষার্থীরা আরো উন্নত ইন্টারনেট সেবা ভোগ করতে পারবে।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ গবেষণা ও শিক্ষা নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) কর্তৃপক্ষের সাথে এ ব্যাপারে আলাপ করার চেষ্টা করা হলে তারা স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে চাননি। তবে তারা বলেন, কিছু কারিগরি ও দাপ্তরিক সমস্যার সমাধান হলেই প্রকল্পের কাজ চালু করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :