ঢাকা শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

সোহরাওয়ার্দী কলেজে ফলাফলের ধস: গৌরবের ইতিহাসে নেমে এলো ছায়া

সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫

সোহরাওয়ার্দী কলেজে ফলাফলের ধস: গৌরবের ইতিহাসে নেমে এলো ছায়া

ছবিঃ আমার ক্যাম্পাস

রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল গত বছরের তুলনায় ব্যাপকভাবে নিম্নগামী হয়েছে। শিক্ষা মান ও ক্লাসের নিয়মিততা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা ও উদ্বেগ।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফল অনুযায়ী, কলেজটির গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬৭.৭২ শতাংশ, যেখানে গত বছর ছিল ৮০.০৯ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৪ জন শিক্ষার্থী, যা গতবারের তুলনায় অনেক কম।

মোট ২,১২৫ জন পরীক্ষার্থী নিবন্ধন করলেও পরীক্ষা দিয়েছে ২,০২৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১,৩৭৪ জন। বিজ্ঞান বিভাগে অংশ নেয় ৩৫৫ জন, পাস করে ২৬৬ জন, এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। মানবিক বিভাগে পাস করেছে ৪৯৪ জন, ফেল করেছে ৪৬৩ জন, জিপিএ-৫ কেউ পায়নি। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাস করেছে ৬১৪ জন, ফেল করেছে ২১৯ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন।

অন্যদিকে, ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির পাসের হার ছিল ৮০.০৯ শতাংশ, আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪২ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ এক বছরে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে প্রায় দশগুণেরও বেশি। 

ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, “ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই কলেজ থেকে মাত্র ৪ জন জিপিএ-৫ পাওয়াটা অস্বাভাবিক।”
তারা অভিযোগ করছেন, নিয়মিত ক্লাস না হওয়া, শিক্ষক সংকট, ও শিক্ষার মানের অবনতি এই ফলাফলের জন্য দায়ী।

একজন শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে শতভাগের কাছাকাছি পাস করে, সেখানে আমাদের কলেজে এই অবস্থা কেন? দু’জায়গাতেই বিসিএস ক্যাডার শিক্ষক, সুযোগ-সুবিধাও প্রায় একই— তাহলে পিছিয়ে পড়ছি কেন?”


কলেজটির উপাধ্যক্ষ ড. ফরিদা ইয়াসমিন ফলাফল নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ফলাফলটা আমাকে সত্যিই কষ্ট দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে আসে না, এটাই মূল কারণ। আমরা বারবার তাদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি— যেন তারা ক্লাসে ফিরে আসে। কিছু বিষয়ে শিক্ষক ও ল্যাব ইকুইপমেন্টের ঘাটতি রয়েছে, তবে আমরা তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।”


উল্লেখ্য, পুরান ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের এমন ফলাফল নিয়ে এখন প্রশাসন থেকে শিক্ষার্থী— সবাই ভাবছে, কোথায় ঘটছে ঘাটতি? সবার প্রত্যাশা, আগামী বছরগুলোতে পুনরায় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ফিরে পাবে তার পুরনো সুনাম ও গৌরব।

আমার ক্যাম্পাস/রিপন খন্দকার

Link copied!