দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গুমের দুই মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাদের ট্রাইব্যুনাল-১ এ আনা হয়।
এর আগে সকাল ৬টার আগেই ট্রাইব্যুনাল চত্বর ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আদালত প্রাঙ্গণ ও সংলগ্ন এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং এপিবিএন সদস্য মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে রাজধানীর কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট ও শাহবাগ এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতেও দেখা গেছে।
গত ৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ গুমের অভিযোগে অভিযুক্ত ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক (ডিজি) এবং র্যাবে কর্মরত তৎকালীন সামরিক কর্মকর্তারা।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাহিনীতে কর্মরত ১৫ জন কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে এলপিআরে থাকা মেজর জেনারেল কবীরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়।
ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, “সেনাবাহিনী দ্ব্যর্থহীনভাবে বিচারের পক্ষে। ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে কোনো আপসের সুযোগ নেই। আমরা বিশ্বাস করি, বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সত্য উদ্ভাসিত হবে।” তিনি গুমের শিকার পরিবারের প্রতি সেনাবাহিনীর গভীর সমবেদনা জানান।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, আজকের শুনানিতে হাজির ১৫ কর্মকর্তার প্রাথমিক জবানবন্দি গ্রহণের পর আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালত এলাকায় সাধারণের প্রবেশ সীমিত রাখা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :