ঢাকা বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫

গাজাগামী ত্রাণবাহী ফ্লোটিলা আটক: বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ, ইসরায়েলি ব্যবসায় হামলা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫

গাজাগামী ত্রাণবাহী ফ্লোটিলা আটক: বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ, ইসরায়েলি ব্যবসায় হামলা

ছবিঃ সংগৃহীত

গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ফ্লোটিলা আটক করায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু সড়ক অবরোধ নয়, অনেক দেশে ইসরায়েলি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার গভীর রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৪১টি নৌযানে থাকা ৪০০ জনেরও বেশি মানবাধিকারকর্মীকে আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। ইসরায়েলের দাবি, আটককৃতরা নিরাপদ আছেন এবং কোনো সহিংসতা ছাড়াই অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। তবে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদে।

আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন, ফ্রান্সের প্যারিস, জার্মানির বার্লিন ও সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। তারা "গাজা তুমি একা নও", "ইসরায়েল বয়কট করো" এবং "ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চাই"—এমন স্লোগানে শহর প্রকম্পিত করেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গাজার ওপর আরোপিত নৌ অবরোধ আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মৌলিক মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

শুধু ইউরোপ নয়, লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস, মেক্সিকো সিটি এবং পাকিস্তানের করাচিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এসব জায়গায় অনেক ক্ষেত্রে ইসরায়েলি মালিকানাধীন দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয় এবং ‘বয়কট ইসরায়েল’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।

ঘটনার কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়াও কম তীব্র নয়। কলম্বিয়া সরকার দেশ থেকে ইসরায়েলের সব কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে এবং চলমান একটি বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করেছে। তুরস্কের সরকার ঘটনাটিকে “সরাসরি সন্ত্রাসী কার্যক্রম” বলে নিন্দা জানিয়েছে। অন্যদিকে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বিরলভাবে ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীদের সমালোচনা করে বলেন, “এই ধরনের পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কোনো বাস্তব সুফল বয়ে আনে না।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নৌবাহিনীর অভিযানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দাবি করেন, তাদের বাহিনী সফলভাবে অবরোধ ভাঙার প্রচেষ্টা প্রতিহত করেছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পরিচালিত এক ধরনের প্রচারণা ব্যর্থ করে দিয়েছে।

গত মাসে স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। এতে ছিলেন বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, চিকিৎসক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকসহ প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী। তাদের লক্ষ্য ছিল—ইসরায়েলি অবরোধ উপেক্ষা করে সরাসরি গাজার উপকূলে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।

ফ্লোটিলা আটককে “জলদস্যুতা ও সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদ” বলে অভিহিত করেছে হামাস। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও ঘটনাটির কঠোর সমালোচনা করেছে এবং গাজার মানুষের ওপর চাপ সৃষ্টি বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!