ঢাকা, ১৭ অক্টোবর – বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দাম বাড়ছেই, তবে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে মূল্য সবচেয়ে বেশি। দুই বছরের ব্যবধানে দেশে এই ধাতুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহে প্রতি ট্রয় আউন্স (৩১.১০ গ্রাম) স্বর্ণের দাম প্রথমবারের মতো ৪,২০০ মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। ২০২২ সালের শুরুতে দাম ছিল দুই হাজার ডলারের নিচে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানাচ্ছে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম পৌঁছেছে ২,১৬,৩৩৩ টাকা, যা দুই বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক অস্থিরতা, যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণে বেশি বিনিয়োগ করছেন। এছাড়া বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সরকারি নীতির দুর্বলতা, টাকার বিপরীতে ডলারের মান কমে যাওয়া ও ব্যবসায়িক মুনাফা বৃদ্ধিও দাম বাড়ানোর অন্যতম কারণ।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা:
-
ভারত: প্রতি গ্রাম ১৩৪.৭০ USD
-
পাকিস্তান: ১৩৬.৯৪ USD
-
নেপাল: ১২৫.০৫ USD
-
বাংলাদেশ: ১৫২.৩৯ USD
বাজুসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানির সুযোগ কম থাকায় অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের ওপর নির্ভর করতে হয়, যা বাজারে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্বর্ণের দাম আগামী কয়েক বছরে কমার সম্ভাবনা কম, বরং বিশ্ব অর্থনীতি ও জিও-পলিটিক্যাল অস্থিরতার কারণে দাম আরও বাড়তে পারে। গোল্ডম্যান স্যাকস পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪,৯০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
বাজুসের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, “বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দাম বাড়ছে। যদি সরকার নিয়মিত আমদানি বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে স্বর্ণ সরবরাহ করাত, তাহলে বাজারে নিয়ন্ত্রণ আরও ভালো হতো।”
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি ও বাংলাদেশে অতিরিক্ত মূল্য পার্থক্য সাধারণ ক্রেতাদের জন্য নতুন চিন্তার বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও আমদানির সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :