ঢাকা রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শুধু লিখতে-পড়তে জানলেই সাক্ষরতা পূর্ণ হয় না : দেবব্রত চক্রবর্তী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫

শুধু লিখতে-পড়তে জানলেই সাক্ষরতা পূর্ণ হয় না : দেবব্রত চক্রবর্তী

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর (বিএনএফই) ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী বলেছেন, “শিক্ষা আনন্দময় না হলে টেকসই হয় না৷ আর শুধু লিখতে-পড়তে জানলেই সাক্ষরতা পূর্ণ হয় না। কার্যকর সাক্ষরতা বলতে বোঝায় জীবনদক্ষতা অর্জন।”

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে নিমো লার্নিং আয়োজিত ‘স্বাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। তিনি জানান, ঝরে পড়া শিশু, কর্মজীবী কিশোর-কিশোরী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নারীদের জন্য কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে ব্যুরো বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, “দেশে সরকারি হিসাবে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ হলেও, পড়ার দক্ষতায় ঘাটতি রয়েছে। প্রাথমিক স্তরে ১৬ শতাংশ এবং মাস্টার্স পর্যায়ে ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী যথাযথভাবে পড়তে পারে না। এই বাস্তবতায় কেবল সাক্ষরতা নয়, দক্ষতা ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি আরও জানান, প্রচলিত স্কুল থেকে ঝরে পড়াদের ফেরানো কঠিন হওয়ায় তাদের জন্য নমনীয় শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ‘১০০ ঘণ্টার সাক্ষরতা শিক্ষা’ এবং ‘৩৬০ ঘণ্টার কারিগরি প্রশিক্ষণ’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্তমানে মোটর মেকানিক্স, ফ্রিজ-এসি মেরামত, সেলুনকর্মীসহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

কক্সবাজারে একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ৬৪ জেলায় কর্মসূচি বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সাক্ষরতার ধারাবাহিকতা রক্ষায় ‘পোস্ট লিটারেসি’ ও ‘কন্টিনিউয়াস লার্নিং’ খুব জরুরি।” এ সময় তিনি জীবনব্যাপী শিক্ষা, লোকশিক্ষা গ্রন্থমালা পুনরুজ্জীবন এবং নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তার ভাষায়, “আমরা চাই শিক্ষা যেন আনন্দময় হয়। আনন্দ ছাড়া কোনো শিক্ষা টেকসই হতে পারে না।” এজন্য প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ভিডিও কনটেন্ট এবং স্থানীয় বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই ট্রেড চালুর পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন সাংবাদিক সোহরাব হাসান, শিক্ষিকা ও অভিনেত্রী দিলারা জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কুতুবউদ্দিন এবং বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাহিদুল ইসলাম খান।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!