বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাতা ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হতে পারে। তবে শতকরা হিসাব ছাড়াও ন্যূনতম দুই হাজার টাকা করে বাড়ি ভাড়া পাবেন তারা। সিনিয়র শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৫ এবং ৮ অক্টোবর নতুন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব পাওয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয় ৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে হিসাব-নিকাশ চলছে এবং খুব শিগগিরই এ বিষয়ে পরিপত্র জারি হতে পারে বলে সূত্র জানায়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়েছে যে বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তাতে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা করে বাড়ি ভাড়া পাবেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন পে স্কেল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন কাঠামোতেও পরিবর্তন আসবে। ২০২৬ সালের মধ্যে বাড়ি ভাতা ২০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আপাতত অর্থ সংকটের কারণে ২০ শতাংশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এদিকে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে থেকে বিকেল পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দিলরুবা শাহীনার কক্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যুগ্মসচিব ও উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় পরিপত্র জারি নিয়ে নীতিগত আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, বাড়ি ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অর্থ উপদেষ্টার অনুমোদন প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ফাইল ডি-নথিতে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে বুধবার দুপুরে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। দুপুর ২টার দিকে জাতীয় গ্রন্থাগারের সামনে পুলিশ তাদের আটকে দিলে শিক্ষকরা ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।
সকালে থেকেই শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তারা ‘বেতন বৈষম্য দূর করো’, ‘শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা করো’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পুরো শহীদ মিনার এলাকা ও আশপাশের সড়কগুলো শিক্ষকদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজীজি বলেন, আমাদের তিনটি প্রধান দাবি—২০ শতাংশ বাড়ি ভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ—এগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।
আপনার মতামত লিখুন :