ঢাকা বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫

স্বজনের খোঁজে মিরপুরে ছবি হাতে অনেকে

আমার ক্যাম্পাস ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫

স্বজনের খোঁজে মিরপুরে ছবি হাতে অনেকে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামের আশপাশে এখনো স্বজনদের খোঁজে ঘুরছেন বহু মানুষ।

তাদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, আগুন লাগার পর থেকেই প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। মোবাইল ফোনেও কোনো সাড়া মিলছে না।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের সবার লাশ পাওয়া গেছে পোশাক কারখানাটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে। বিকেল ৪টার দিকে প্রথমে নয়জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানানো হয়; সন্ধ্যা ৭টার পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬-তে।

তবে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কেউই এখনও নিহতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি। উদ্ধারকৃত মরদেহগুলো পুড়ে যাওয়ায় শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিকেল থেকে ঘটনাস্থলে ভিড় বাড়তে থাকে নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনদের। কেউ কাঁদছেন, কেউবা ছবিসহ প্রিয়জনদের খুঁজছেন।

ভাইয়ের ছেলে রবিনের ছবি হাতে ভবনের চারপাশে ঘুরছেন নাসিমা আক্তার। তিনি জানান, রবিন “জিএম ফ্যাশন” নামের একটি পোশাক কারখানায় কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করতেন। তার কর্মস্থল ছিল পুড়ে যাওয়া ভবনের তৃতীয় তলায়। নাসিমা বলেন, “ভবনের ওপরের তলা থেকে অনেকেই বের হতে পেরেছে, কিন্তু তিনতলার কেউ বের হতে পারেনি। সকাল থেকে ফোন দিচ্ছি, কোনো খবর পাচ্ছি না।”

অন্যদিকে, শাকিল আহমেদ খুঁজছেন তার মামাতো ভাই খালিদ হাসান সাব্বিরকে। সাব্বির ওই ভবনের “আরমান গার্মেন্টস”-এ স্টোর ইনচার্জ হিসেবে কাজ করতেন। শাকিল বলেন, “ওর ফোন এখনো বাজছে, কিন্তু কেউ ধরছে না।”

বন্ধু সারোয়ারের খোঁজে ঘটনাস্থলে এসেছেন আমানুল্লাহ। তিনি জানান, সারোয়ার কয়েকদিন আগে পাশের ওয়াশিং ফ্যাক্টরিতে হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। আগুন লাগার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

দমকলের ১২টি ইউনিট দুপুর থেকে আগুন নেভাতে কাজ করছে। পোশাক কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও রাসায়নিকের গুদামে আগুন দীর্ঘ সময় ধরে জ্বলতে থাকে। স্থানীয়দের ভাষ্য, গুদামটি “আলম সাহেব” নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাসায়নিকের গুদাম থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়, যা দ্রুত পাশের কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা নাগাদও এলাকাজুড়ে রাসায়নিকের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে থাকে। পুলিশ, দমকল ও স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে, আর স্বজনরা মরিয়া হয়ে খুঁজছেন তাদের প্রিয়জনদের।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!