ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

আর্টেক্স শিল্পীদের ছোঁয়ায় বর্ণিল বুটেক্স ক্যাম্পাস 

বুটেক্স প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫

আর্টেক্স শিল্পীদের ছোঁয়ায় বর্ণিল বুটেক্স ক্যাম্পাস 

ছবি: আমার ক্যাম্পাস

আর্টেক্স নামে খ্যাত আর্টিষ্ট অব বুটেক্স হলো বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম একটি সংগঠন যেখানে শিক্ষার্থীরা ফটোগ্রাফি এবং চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়।

৪১ তম ব্যাচের কিছু উচ্চাকাঙ্খী এবং দুর্দান্ত তরুণের হাত ধরে উক্ত সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত অনেক ধরনের কার্যকলাপের মাধ্যমে এর আত্মপ্রকাশ করে চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ২২ ই ফেবরুয়ারি একঝাঁক প্রাণবন্ত শিল্পী মিলে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের নিজস্ব কিছু অ্যামবিগ্রাম এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জাগায় গ্রফিতির মাধ্যমে তাদের প্রথম পথচলা শুরু করে। তারপর ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে Lets Beautify BUTEX নামে একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয় , যায় মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ক্যাম্পাসের সার্বিক সৌন্দর্যবর্ধন এবং পরিষ্কার করা। এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। দেশের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য শিক্ষার্থীরা রংমাখা হাত দিয়ে লাল সবুজ পতাকা তৈরি করেন।

১৪ এপ্রিল ৪৫ তম নবীন ব্যাচের জন্য ' রং ঢং বৈশাখ ' নামে দেয়ালিকা প্রতিযোগিতা, প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের জন্য আলাদা লোগো অঙ্কন, আলপনা অঙ্কন আয়োজন করা হয় এবং দেয়ালিকা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, রানারআপ হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। ১১ ও ১২ নভেম্বরে দুইদিন ব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নীরবতায় কলরব’ নামে একটি ইভেন্ট আয়োজন করে যেখানে সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মিলে ২০ টির বেশি গ্রফিতি আঁকে ,যেখানে টেক্সটাইল শিল্প, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ এবং গুণী ব্যক্তিবর্গের গ্রাফিতি বিশেষভাবে ফুটে উঠে।

আয়োজনের দ্বিতীয় দিন রাতে ‘হালকা কলরব’-এর অংশ হিসেবে Insipid, Suicidal pumpkin, 5th chapter, Golpo ব্যান্ডের গানে ক্যাম্পাস মুখরিত হয়। এই একবছরের পথচলায় আর্টেক্স সদস্যদের শৈল্পিক সৃজনশীলতার পূর্ণতা দিতে ২২ অক্টোবর, ২০১৯ সালে প্রাতিষ্ঠা নিক সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। তাছাড়া করোনা মহামারীর সময় অনলাইনে ‘যেমন খুশি তেমন আঁকো’ প্রতিযোগিতা আয়োজন করার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সচেতনতামূলক চিত্র সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।

এছাড়াও গতবারের বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনায় আন্দোলিত হয়ে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ফুটবল বিশ্বকাপের গ্রাফিতি অঙ্কন করে শিক্ষার্থীরা। গ্রাফিতির অংশ হিসেবে দেখা যায়, তারকা ফুটবল প্লেয়ার ব্রাজিলের নেইমার, সিলভা, সান্তোস জুনিয়র, আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি, পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, জার্মানির ম্যানুয়েল ন্যুয়েরের মনোক্রোম্যাটিক আর্ট। সঙ্গে আঁকা হয়েছে কাতার বিশ্বকাপের মাসকট লা’ইব। গ্রাফিতির অন্য এক অংশে দেখা মেলে ফুটবলারের পায়ে কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ৩২টি দেশের পতাকা, যা ওই দেশের ফুটবলের নান্দনিকতা প্রদর্শনকে প্রতিভাসিত করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ তম ব্যাচের বিদায় বেলায় নবাত্রিক তেতাল্লিশ গমন নামক প্রোগ্রামে র‍্যাগওয়াল রাঙিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টেক্সের শিল্পীরা। বুটেক্স সাংবাদিক সমিতি এবং আর্টেক্স এর সম্মিলিত প্রয়াসে জার্নালটিজম নামক একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল তুলির আঁচড়ে সাংবাদিকতাকে তুলে ধরা। যার ফলশ্রুতিতে সাংবাদিক সমিতির অফিসকক্ষের প্রতিটি দেয়ালে শোভা পাচ্ছে নান্দনিক সব গ্রফিতি।

অপরদিকে বুটেক্সের নবীনতম ৪৯ ব্যাচকে স্বাগত জানাতে তিনদিন ব্যাপী স্ট্রিট গ্রফিতি করার উদ্যেগ নেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এতে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের একক গ্রফিতি আঁকা হয় যা তাদের স্বকীয়তা প্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টেক্স এর শিল্পীদের ক্যাম্পাসকে রং তুলির ছোঁয়ায় বর্ণিল করার এই প্রয়াস প্রশংসার দাবিদার।

আমার ক্যাম্পাস/মোঃ সিনান উদ্দিন রনি

Link copied!