জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের আলোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শুক্রবার অনুষ্ঠিত সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতসহ ২৫টি রাজনৈতিক দল সনদে স্বাক্ষর করলেও, অংশ নেয়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) এবং বাংলাদেশ জাসদ।
সনদ স্বাক্ষরের পরপরই ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা। তারা স্বাক্ষরকারী দলগুলোর কঠোর সমালোচনা করে তাদের ‘জুলাইয়ের গাদ্দার’ বলে অভিহিত করেন। বিশেষ করে জামায়াতের অংশগ্রহণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই।
এ প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাল্টা জবাব দিয়েছেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লেখেন,
“বিএনপি, জামায়াতসহ ২৫টি রাজনৈতিক দল এবং আপ বাংলাদেশ জুলাইয়ের গাদ্দার। এই গাদ্দারিতে সমন্বয় করেছে ড. ইউনূস ও তার অন্তর্বর্তী সরকার। এনসিপি, সিপিবি, বাসদ, জাসদ হলো জুলাইয়ের একমাত্র শক্তি। এনসিপির ছাত্র উপদেষ্টারা কি পদত্যাগ করছেন তাহলে?”
রাফের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ওই পোস্টেই এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ লিওন মন্তব্য করেন:
“এনসিপির ছাত্র উপদেষ্টা মানে কি রিফাত? ছাত্র উপদেষ্টা গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের প্রতিনিধি। তোমরা তো পুরো প্রশাসন দখলে নিয়েছ।”
এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, জুলাই আন্দোলনের পটভূমিতে গড়ে ওঠা অন্তর্বর্তী সরকার ও এর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে এখনও ভেতরে অসন্তোষ এবং মতপার্থক্য রয়ে গেছে। সনদে স্বাক্ষর না করা দলগুলো নিজেদের ‘আসল শক্তি’ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে, যেখানে স্বাক্ষরকারী দলগুলো একে ঐক্য ও বাস্তবতার প্রতিফলন বলছে।
জুলাই সনদ নিয়ে মতবিরোধ এখন শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই নয়, বরং তা ছাত্র ও নাগরিক আন্দোলনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বেও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে আন্দোলনের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে—সব পক্ষকে নিয়ে একক কোনো পথ তৈরি হবে, না কি বিভাজন আরও বাড়বে?
আপনার মতামত লিখুন :