পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা হিজাব ও নিকাব পরা শিক্ষার্থীদের হেনস্তার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. আবদুল আওয়াল বরাবর স্বারকলিপি জমা দিয়েছেন। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে তারা এই স্বারকলিপি জমা দেন।
এদিন উপাচার্য ছাড়াও শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান খান এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো: রাশেদুল হক বরাবর এই স্বারকলিপি জমা দেন।
স্বারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসে ছাত্রীদের চিহ্নিতকরণে যেন যথাসম্ভব নারী শিক্ষকের মাধ্যমে করা হয় এবং হিজাব বা নিকাব খুলতে বাধ্য করা না হয়। তারা স্বারকলিপিতে তিনটি প্রধান দাবি উল্লেখ করেছেন:
১. ছাত্রীদের শনাক্তকরণের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করা।
২. বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত মহিলা শিক্ষিকাদের মাধ্যমে শনাক্তকরণ নিশ্চিত করা।
৩. হিজাব ও নিকাব খুলতে বাধ্য না করা এবং কোনো ধরনের বুলিং বা ট্যাগিং না করা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজে আমাদের বোনেরা হিজাব ও নিকাব পড়ার কারণে নিয়মিত হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। পাবিপ্রবিতেও পূর্বে এবং বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বা প্রেজেন্টেশনে মুখ খুলতে বাধ্য হওয়া এবং মার্কস কম দেওয়া সহ নানা হেনস্থার সম্মুখীন হয়েছেন।
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোছা: মৌসুমি খাতুন বলেন, "পর্দা সম্পর্কে সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিন নারীদেরকে বলো তারা যেন তাদের হিজাবের কিছু অংশ নিজেদের ওপর ঝুলিয়ে দেয়।’ এটি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হবে, যাতে তাদের কষ্ট দেওয়া না হয়। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।"
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাগফিরাতুল জান্নাত মিম বলেন, "বিগত সময়ে অনেক শিক্ষার্থী হিজাব ও নিকাব পরার কারণে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। ভাইবা, প্রেজেন্টেশনে মুখ খুলতে বাধ্য করা এবং মার্কস কম দেওয়া এসবের প্রতিকার হিসেবে আজ আমরা একত্রিত হয়ে উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ও রেজিস্টারের কাছে স্বারকলিপি জমা দিয়েছি। আশা করি, আমাদের দাবি দ্রুত কার্যকর হবে।"
রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, "কারো পোশাক নিয়ে কখনোই হেনস্তা করা উচিত নয়। শিক্ষার্থী যেকোনো ধর্মেরই হোক, তাদের প্রতি সম্মান বজায় রাখা আমাদের দায়িত্ব।"
আপনার মতামত লিখুন :