ঢাকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

রাবি সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, তদন্তের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫

রাবি সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, তদন্তের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় সুইমিংপুলে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই বিক্ষোভে তারা প্রশাসনের অবহেলার অভিযোগ এনে দায়ীদের বিচারের দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ও মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বহীনতাই এ ঘটনার মূল কারণ। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন—‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘কে মেরেছে, কে মেরেছে, প্রশাসন প্রশাসন’।

ঘটনার পর রাতেই পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, সাঁতার অনুশীলনের সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বা তদারকি ছিল না। এমনকি দুর্ঘটনার পরও চিকিৎসা সহায়তা যথাসময়ে দেওয়া হয়নি।

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোসা. রোখসানা বেগম প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীর মৃত্যু সম্ভবত ‘হার্ট অ্যাটাকের’ কারণে হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, যথাযথ ফিটনেস যাচাই ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করার কারণেই এই মৃত্যু ঘটেছে।

রাত ৯টার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তারা দাবি জানান—দায়ীদের শাস্তি, সুইমিংপুলে নিরাপত্তা জোরদার, এবং মেডিকেল সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির।

রাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “আমরা এতক্ষণ ধরে আন্দোলন করছি, কিন্তু প্রশাসনের কোনো প্রতিনিধি এখনো আসেননি। তারা সব সময়ই এমন করেন—ছাত্ররা ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এবারও আমরা সেই অবহেলার শিকার।”

রাকসুর সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, “একজন শিক্ষার্থী সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গেলে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি কেন? শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ফিটনেস যাচাই ছাড়া কীভাবে অনুমতি দিল? দুর্ঘটনার পর আধা ঘণ্টা পর্যন্ত কেউ খেয়াল করেনি কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রশাসনকে দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাবি মেডিকেল সেন্টারের অব্যবস্থাপনা নতুন নয়। এর আগেও অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। আজও সায়মাকে বাঁচানোর যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”

উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা চাইনি কোনো গড়িমসি হোক। কমিটিতে উপ-উপাচার্য ফরিদ সাহেব আছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তারা প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেবেন, তারপরই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে সুইমিংপুল ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন নিরাপত্তা প্রটোকল প্রণয়ন করা হবে।

আমার ক্যাম্পাস

Link copied!