চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যাম্পাস থেকে বন্দরনগরীর দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। আবাসিক সুবিধার সংকটের কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই থাকেন নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। ফলে চাকসু নির্বাচনের উন্মাদনা এখন ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে পুরো নগরীতেই ছড়িয়ে পড়েছে।
ষোলশহর ২ নম্বর গেট রেলস্টেশন থেকে শুরু করে মুরাদপুর, চকবাজার, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার মেস ও ছাত্রাবাসগুলোয় চলছে প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। রেলস্টেশনের প্রবেশমুখ থেকে ওভারব্রিজ পর্যন্ত ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে চারপাশ। ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রচারণা চোখে পড়ছে সর্বত্র।
স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী ফয়সাল বিন ওমর (সমুদ্র) বলেন, “অনাবাসিক শিক্ষার্থীর বড় অংশই ষোলশহর রেলস্টেশন হয়ে শাটল ট্রেনে আসা-যাওয়া করেন। তাই তাদের মনোযোগ আকর্ষণেই শহরকেন্দ্রিক প্রচারে জোর দিয়েছি।”
বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী চৌধুরী তাসনীম জাহান শ্রাবণ বলেন, “ক্যাম্পাসে যারা থাকেন, তাদের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষার্থী নগরীতে থাকেন। তাই রেলস্টেশন ও মেস এলাকাগুলোয় প্রচারে গুরুত্ব দিচ্ছি।”
শিক্ষার্থীদের দাবি, অনাবাসিকদের যাতায়াত সমস্যা, নিরাপত্তা ঘাটতি, সেশনজট, টিউশন ফি বৃদ্ধি, এবং হলে সিট সংকট এবার নির্বাচনের বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। প্রার্থীরা ইশতেহারে এসব সমস্যার সমাধানে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
চবিতে বর্তমানে ২৮ হাজার ৫১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ৬ হাজার ৪০০ জন। ফলে ২২ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী থাকেন ক্যাম্পাসের বাইরে।
চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার শিক্ষার্থী রাজ্জাকুল আলম বলেন, “আমাদের মেসেও প্রার্থীদের লিফলেট আসছে। মোবাইলেও ভোট চেয়ে বার্তা পাচ্ছি। এখন শহরেও যেন ক্যাম্পাসের মতোই ভোটের আমেজ।”
নগরীর মেস, কটেজ ও শাটল ট্রেন এখন নির্বাচনী প্রচারণার নতুন কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ফলে এবারের চাকসু নির্বাচন শুধু ক্যাম্পাসেই নয়, পুরো চট্টগ্রাম নগরীতেই তৈরি করেছে উৎসবমুখর পরিবেশ।

আপনার মতামত লিখুন :