চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রশিবির। সংগঠনটির দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. সংঘর্ষে জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ২. বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের শাস্তি ৩. শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিতকরণ ৪. আহতদের উন্নত চিকিৎ ৫. শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরে প্রশাসনিক ভবন, শহিদ মিনার ও কাটাপাহাড় রোড প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি জিরো পয়েন্টে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা হাতে নানা প্ল্যাকার্ড বহন করে এবং বিভিন্ন স্লোগান দেয়। তাদের স্লোগানে প্রতিধ্বনিত হয়—
“বিচার নিয়ে তালবাহানা চলবে না, চলবে না”
“সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও”
“সন্ত্রাসীদের বিচার চাই, হাসপাতালে আমার ভাই”
“সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না”
“সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, এই মুহূর্তে দরকার”
শিবিরের নেতারা অভিযোগ করেন,হ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। একইসঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি।
এই বিক্ষোভ মিছিলের -পরবর্তী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম। সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির বায়তুলমাল সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলাম।
বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি, শাখা সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ, প্রচার সম্পাদক মো. ইসহাক ভূঁঞা এবং শিক্ষা সম্পাদক মোনায়েম শরীফ।
শাখা সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ৩০ ও ৩১ আগস্ট সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এই ঘটনার নেপথ্যে কারা উসকানি দিয়েছে, কারা নির্দেশ দিয়েছে এবং কারা সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিয়েছে—তা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে। একইসঙ্গে আবাসন সংকট সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা উচ্চমূল্যে কটেজে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা আবাসন, নিরাপত্তা, উন্নত চিকিৎসা এবং ন্যায়বিচার চাই।”
চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, “ক্যাম্পাসের প্রতিটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারী দেখেছে ইসলামি ছাত্রশিবির কতটা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। শিবির নিয়ে সমালোচনা করার আগে সবার উচিত নিজেদের ভূমিকা নিয়ে আত্মসমালোচনা করা। যদি আত্মসমালোচনা করতে না পারেন, আমাদের কাছে আসুন— আমরা শেখাতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“ক্যাম্পাস ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। প্রশাসন শুধু নীরব থাকলেই চলবে না, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়সারা দায়িত্ব না করে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, আবাসন সংকট এবং প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশে উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। তারা দ্রুত সমস্যার সমাধান ও একটি নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :