ঢাকা শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

জবিতে জাতীয় ছাত্রশক্তি নেতার পদত্যাগ নাটক, ক্যাম্পাসেজুড়ে সমালোচনার ঝড়

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৫

জবিতে জাতীয় ছাত্রশক্তি নেতার পদত্যাগ নাটক, ক্যাম্পাসেজুড়ে সমালোচনার ঝড়

ছবিঃ আমার ক্যাম্পাস

জাতীয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা জাতীয় ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ। তবে কিছুক্ষণ পরই পোস্টটি নিজের টাইমলাইন থেকে মুছে ফেলেন তিনি।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে দেওয়া ওই পোস্টে ফয়সাল লেখেন, “জকসু নিয়ে জাতীয় ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির তেমন কোনো চিন্তাভাবনা নেই। তারা শুধু ডাকসু নিয়েই ব্যস্ত ছিল, এখন আবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে নিমজ্জিত। আমরা যারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশক্তির রাজনীতি করেছি, তাদের প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে।”

তিনি আরও লেখেন, “আমি সংগঠনের আহ্বায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা দিয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। তবে আমার সহকর্মীদের অন্ধকারে রেখে, তাদের একাডেমিক জীবনের ক্ষতি করে, রাজনৈতিক স্বপ্ন পুড়িয়ে ছাই করে সেই দায় আর বহন করতে পারবো না। তাই আমি সংগঠনের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিচ্ছি।”

বিষয়টি নিয়ে ফয়সাল মুরাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এর আগেও তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও পরে আবার জকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন।

এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে জুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষার্থী নূরনবী ইসলাম বলেন, “ফয়সাল মুরাদ তুখোড় রাজনীতিক। পদ পাওয়ার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে—এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। একসময় নিজেই বলেছিল, ছাত্রদলে ভালো পদ না পেয়ে বাগছাসে যোগ দিয়েছে। এখন আবার অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করে পোস্টও ডিলিট করেছে। পরে দেখি জাতীয় ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটিও ঘোষণা হয়েছে। এসব নেতা পদের লোভে নিজেদের কর্মীদেরও ধ্বংস করে ফেলছে।”

আরেক শিক্ষার্থী এবং জবি ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, “মো. নূরনবীরা পদত্যাগ করে পোস্ট ডিলিট করে না। রাজনৈতিক গাটস না থাকলে রাজনীতি করার দরকার নেই। নূর নবী একসময় শিবিরে ছিল, আর তুমি ছিলে ছাত্রদলে—তার ওপর দুজনেই জবিয়ান। ভাই-ব্রাদার পার্টিতে তোমাদের জায়গা নেই এটা বুঝে ওঠার সময় এসেছে। রাজনীতি মানে শুধু উলালা করা না, সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাটাও রাজনীতি। তুমি ভাবছিলে ভাই-ব্রাদার দল ফান্ডিং করবে, কিন্তু যখন দেখলে পাত্তা দিচ্ছে না, তখন পদত্যাগের পোস্ট দিয়ে পরে আবার ডিলিট করলে—এটা গাটসলেস কাজ। জগন্নাথের একজন আপোষহীন নেতা হিসেবে এটা তোমার সঙ্গে যায় না। জগন্নাথের একজন আপোষহীন নেতা হিসেবে এটা তোমার সঙ্গে যায় না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দিনই যদি তুমি বুঝতে পারতে এরা তোমার ভাই-ব্রাদার না, এবং তখনই পদত্যাগ করতে, সেটাই হতো সত্যিকারের রাজনৈতিক অবস্থান।”

আমার ক্যাম্পাস/রিয়ন

Link copied!