দীর্ঘ ৩৩ বছর পর গত ১১ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনুষ্ঠিত হয় বহুল প্রতীক্ষিত কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। নির্বাচনের পর শপথ গ্রহণ করে নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করেছেন নবনির্বাচিত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা। তবে শপথ গ্রহণের প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে কারা যাচ্ছেন-তা নির্ধারিত হয়নি। ফলে সিনেট সদস্য মনোনয়ন নিয়ে জাকসুর অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও জল্পনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের এক্ট অনুযায়ী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি কর্তৃপক্ষের মধ্যে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা হলো সিনেট। একই আইনের ১৯(১) (কে) ধারায় বলা হয়েছে, জাকসু মনোনীত পাঁচজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সিনেট সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। তবে এখনো পর্যন্ত জাকসু আনুষ্ঠানিকভাবে এই পাঁচ সদস্যের নাম ঘোষণা করেনি।
জাকসুর অন্তত সাতজন নির্বাচিত প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিনেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মনোনয়ন নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। যদিও অনানুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে, শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
তাদের মধ্যে তিনজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু মডেল অনুসরণে পদাধিকারবলে ভিপি, জিএস, দু'জন এজিএস এবং অতিরিক্ত একজন সদস্যকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নারী প্রতিনিধিদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
অন্যদিকে চারজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তারা
ভোটাভুটির মাধ্যমে সিনেট সদস্য মনোনয়নের পক্ষে। তাদের মতে, যেহেতু জাকসুর নেতৃত্ব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত, সেহেতু সিনেট সদস্য মনোনয়নেও গণতান্ত্রিক ভোটাভুটি হওয়া উচিত। ভোটে সর্বাধিক সমর্থন পাওয়া প্রতিনিধিরাই সিনেটে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে মত তাদের। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কাউকে মনোনীত করা হবে কি না, সে বিষয়ে কেউই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।
এ বিষয়ে জাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ)
ফেরদৌস আল হাসান বলেন, "জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেছে। বিধি অনুযায়ী জাকসু মনোনীত পাঁচজন শিক্ষার্থী সিনেট সদস্য হবেন। আমরা আশা করছি, শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেবেন।"
একই বিষয়ে জাকসুর ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুর রশিদ জিতু বলেন,"আমরা এই সপ্তাহের মধ্যেই সিনেট সদস্য নির্বাচন করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র ও বিধিমালা অনুসারেই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।"

আপনার মতামত লিখুন :