টানা নবম দিনে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের আমরণ অনশন চলাকালে তীব্র গরমে কমপক্ষে চারজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে কেন্দ্রীয় প্রাঙ্গণে আমরণ অনশন চালাচ্ছেন।
গাইবান্ধার আকবর আলি আব্দুল হাই স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী মন্ডল অনশনে অচেতন হয়ে পড়লে দুপুর ১২টায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয় বলে আন্দোলন সংশ্লিষ্ঠরা জানান। এরপর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন থাকায় তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
আন্দোলনের সদস্যসচিব ও শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী নিজেও অনশনের সময় শারীরিক অসুস্থতার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন; তিনি লিখেছেন মানসিকভাবে দৃঢ় থাকলেও শারীরিক কিছুটা অসুস্থতা বোধ করছেন। অনশনরতদের দাবি ও কর্মসূচি নিয়ে তিনি সক্রিয় রয়েছেন।
আন্দোলন সমন্বয়কারী ফয়েজ আহমেদের ভাষ্য অনুযায়ী, সকাল থেকেই তীব্র রোদে অবস্থানের কারণে এখন পর্যন্ত অন্তত চারজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং তাদের মধ্যে কেউকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীরা সরকারকে তাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
শিক্ষক-কর্মচারীদের অন্যতম দাবি হলো বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ এবং এমপিওভুক্ত সব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণসহ অন্যান্য আর্থসামাজিক দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করা। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনায় বাড়িভাড়া ভাতার হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করার বিধান জারি হওয়ায় তা শিক্ষকরা প্রত্যাখ্যান করেছেন—এ বিষয়টিও আন্দোলনের মূল কারণগুলোর একটি।
অন্দোলনস্থলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আরও শিক্ষকরা যোগ দিচ্ছেন। অনশনে অংশ নেওয়া অংশগ্রহণকারীরা সুশৃঙ্খলভাবে দাবি আদায়ের প্রস্তুতি জোরদারের আশ্বাস দিয়েছেন এবং চিকিৎসা প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার অনুরোধ করছেন। সাংবাদিকদেরও উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষার প্রশ্নটিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও আয়োজন নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, দাবির প্রতিফল না পর্যন্ত তারা সন্ধিক্ষণে ফিরে যাবেন না।

আপনার মতামত লিখুন :