শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামবিরোধী কোনো এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়া হলে তা মেনে নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দলটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে এই হুঁশিয়ারি দেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশিত নতুন গেজেটে ধর্মীয় শিক্ষক বাদ দিয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা প্রকাশ করা হয়েছে, যা ‘ইসলামবিরোধী এজেন্ডা’। অবিলম্বে এই গেজেট বাতিল করে সংগীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না করলে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
হেফাজত নেতারা বলেন, ইসলামে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং সংগীত কোনো মৌলিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে অভিভাবকদের মতামত উপেক্ষা করে প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার সরকারের নেই। তাই প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা প্রণয়ন করা অপরিহার্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পতিত আওয়ামী সরকারের সময় থেকেই শিক্ষাক্ষেত্রে ইসলামবিরোধী ধারা প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছিল। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগে কিছু পশ্চিমাপন্থী এনজিওকর্মীর প্রভাবে সেই এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এলজিবিটি প্রচার ও গান-বাজনার মাধ্যমে মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামি মূল্যবোধ থেকে দূরে সরানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
নেতারা উল্লেখ করেন, বাংলা, অঙ্ক ও ইংরেজির মতো মৌলিক বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্বলতার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলের পরিবর্তে মাদ্রাসায় পাঠাচ্ছেন। অথচ এসব মৌলিক বিষয়ে মানোন্নয়নে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের পরিবর্তে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বহুদিন ধরে ইসলামি দলগুলো প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেম শহীদ হয়েছেন। তাদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং মাদ্রাসা শিক্ষিতদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতেই প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ জরুরি। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইসলামি মূল্যবোধ ও রাসুল (সা.)-এর সম্মান রক্ষায় যাদের আত্মদান রয়েছে, সরকারের উচিত তাদের প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করা।
হেফাজতের আমির ও মহাসচিব আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করবে। আলেম-ওলামার সঙ্গে সরকারের অযথা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক—এটা তারা চান না।
আপনার মতামত লিখুন :